ভারতের প্রয়োজনেই দেশের নদী ড্রেজিং!

ভারতের প্রয়োজনেই দেশের নদী ড্রেজিং!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে বাংলাদেশের পথ ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য পরিবহনে পরীক্ষামূলক ট্রান্সশিপমেন্ট চালু হচ্ছে। এ জন্য ভারতকে কোনো বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে না। বাংলাদেশ-ভারতের সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে গত বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দু’দেশের নৌ সচিবরা এ তথ্য জানিয়েছে।

বাংলাদেশের নৌ সচিব আবদুস সামাদ বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে দুই দেশের নৌ যোগাযোগ আরও বাড়ানোর চেষ্টা করেছি। সারা পৃথিবীতে দুই দেশের কানেকটিভিটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দুই দেশের মধ্যে সড়ক ও রেলের তুলনায় নৌ যোগাযোগ বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

আব্দুস সামাদ বলেন, চিলমারী-ডুবরি নৌপথে কম গভীরতার জাহাজ চলার বিষয়ে সম্মত হয়েছি। আত্রাই নদীর ভারতীয় অংশে ৪২ কিলোমিটার খননের বিষয়ে সচিব বলেন, আমরা নওগাঁ থেকে দিনাজপুর খনন করেছি। তাদের ওই ৪২ কিলোমিটার খনন করতে অনুরোধ জানিয়েছি। তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে এ কাজটি করবেন।

নৌ সচিব জানান, ভারতের জোগিগোপা ও বাংলাদেশের বাহাদুরাবাদ (জামালপুর) পোর্ট অব কলভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর আগে চিলমারী পোর্ট অব কলভুক্ত করা হয়েছিল। এখন বাহাদুরাবাদ পোর্ট অব কলভুক্ত করায় ভারত ও ভুটান থেকে যেসব পণ্য উত্তরবঙ্গে আসবে, সেগুলো চিলমারী ও অন্য রুটের পণ্য বাহাদুরাবাদ আসতে পারবে। এতে নারায়ণগঞ্জ আসার খরচ কমে আসবে।

ভারতের নৌ সচিব গোপাল কৃষ্ণ জানায়, বিগত চার বছরে তিনটি চুক্তি হয়েছে। আমরা নৌ যোগাযোগ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়েছি। নৌ যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও নেতৃত্বের পর্যায়ে রয়েছে।

ট্রান্সশিপমেন্ট চার্জ নিয়ম অনুযায়ী হবে উল্লেখ করে ভারতের নৌ সচিব জানায়, আমরা দুটি ট্রায়াল রান করব। প্রথমটি জানুয়ারিতে। এরপর দ্বিতীয় ট্রায়াল রান। এরপরই দ্রুততার সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট চালু করতে চাই। এর সুবিধা জনগণ পাবে। সে জন্য দুই দেশই একসঙ্গে কাজ করবে। এর মাধ্যমে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক খুবই ভালো এবং আরও শক্তিশালী হবে।

চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য আনা-নেয়ার ওপর আন্তঃসরকার কমিটির বৈঠকের বিষয়ে নৌ সচিব সামাদ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত গ্যাটের স্বাক্ষরকারী হিসেবে ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্যের ওপর কাস্টমস প্রযোজ্য নয়। তবে অপারেশনাল ও সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য। মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে বিদ্যমান নিজ নিজ ট্যারিফ শিডিউল অনুযায়ী চার্জ আদায় করা হবে।

তিনি আরও বলেন, সড়ক পরিবহনের আইন অনুযায়ী সড়ক চার্জ হবে। তবে সব চার্জই র‌্যাশনাল ও লজিকাল ওয়েতে (যৌক্তিক ও বাস্তবভিত্তিক) হবে। এ চুক্তির আওতায় ই-লক ব্যবহার হবে। অর্থাৎ ভারত থেকে কোনো পণ্য চট্টগ্রাম বন্দরে আসার পর কাস্টমস সেটি ই-লক করবে। ওই পণ্য আখাউড়া দিয়ে গেলে সেই বন্দরে সেই লক কাস্টমস খুলে দেবে। এছাড়া এসব পণ্য আখাউড়া বা অন্য বন্দরে যেখানে যাক না কেন বাংলাদেশের ট্রাক-টেইলর বা নৌযান ব্যবহার করবে।

পর্যটকদের অন অ্যারাইভাল ভিসার বিষয়ে সচিব বলেন, দুই দেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে অন অ্যারাইভাল ভিসা দরকার। আমরা প্রস্তাব করেছি। ভারতের নৌ সচিব সম্মত হয়েছেন। তবে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আমরা জানাব যাতে পর্যটকদের এ ভিসা দিতে পারি।