বড় নিষেধাজ্ঞা ও বয়কটের আওতায় আসছে ঋণখেলাপিরা

বড় নিষেধাজ্ঞা ও বয়কটের আওতায় আসছে ঋণখেলাপিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বেচ্ছা ঋণ খেলাপিদের রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে বয়কট করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। তাদের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ রাখার পাশাপাশি পেশাজীবী, ব্যবসায়িক, সামাজিক সংগঠনেও নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালকদের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এসব বিধান রেখে ফাইনান্স কোম্পানি আইনের খসড়া চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। রোববার ফাইনান্স কোম্পানি আইনে, ২০২০ এর খসড়া অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতি বিভাগের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতামতের পর আইনটি চূড়ান্তভাবে প্রণয়ন করা হবে।

খসড়া বিলে বলা হয়েছে, ফাইন্যান্স কোম্পানি খেলাপি বা স্বেচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা শনাক্তকরণ এবং সিআইবিতে রিপোর্টকরণ-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা পরিপালন করবে। খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে দেউলিয়া ঘোষণা করার লক্ষ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানি দেউলিয়া আদালতে আবেদন করবে বা ওই রূপে আবেদন করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ফাইন্যান্স কোম্পানিকে নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।

খেলাপি ঋণগ্রহীতার অনুকূলে ফাইন্যান্স কোম্পানি কোনোরূপ ঋণ প্রদান করবে না। স্বেচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাকে তালিকাভুক্তির এক মাসের মধ্যে তার বকেয়া ঋণ আদায়ের জন্য ফাইন্যান্স কোম্পানি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা দায়ের করবে।

স্বেচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতাদের তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের কাছে প্রেরণপূর্বক তাদের বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ি ও বাড়ি রেজিস্ট্রেশন, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু, যৌথমূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদফতর এর কোম্পানি নিবন্ধনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলে সরকার সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এতে আরও বলা হয় স্বেচ্ছাকৃত খেলাপি ঋণগ্রহীতা রাষ্ট্রীয় ও সামাজিকভাবে কোনো সম্মাননা পাওয়ার বা রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না এবং কোনো প্রকার পেশাজীবী, ব্যবসায়িক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা ফাইন্যান্স কোম্পানি আইন, ২০১৯ রাজনৈতিক সংগঠন পরিচালনার লক্ষ্যে গঠিত কোনো কমিটির, যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন, কোনো পদে অধিষ্ঠিত হতে বা আসীন থাকতে পারবে না।

প্রস্তাবিত নতুন আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপির সংজ্ঞায় বলা হয়েছে যদি কোনো ব্যক্তি তার নিজের বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদত্ত ঋণ বা ঋণের অংশ বা তার ওপর অর্জিত সুদ বা উহার মুনাফা তাহার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী পরিশোধ না করেন বা তিনি জাল-জালিয়াতি, প্রতারণা ও মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নামে ঋণ গ্রহণ করেন বা তিনি, যেই উদ্দেশ্যে ঋণ প্রদান করা হয়েছিল সেই উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ওই ঋণ বা ঋণের অংশ ব্যবহার বা স্থানান্তর করেন; বা তিনি ঋণের বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ঋণ প্রদানকারী ফাইন্যান্স কোম্পানির অজ্ঞাতসারে হস্তান্তর বা স্থানান্তর করেন।