বিজিএমইএ সভাপতির বিরুদ্ধে মামলার হুমকি

বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে যে সব শর্ত

নিউজ ডেস্ক: মুচলেকা দিয়ে ভবন ভাঙার সময় নেয়ার পরও পুনরায় এক বছর সময় চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাহার করতে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতিকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

৭২ ঘণ্টার মধ্যে সময় চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাহার করতে বিজিএমইএ’র সভাপতিকে বলা হয়েছে, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত ১২ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবন ভাঙতে আপিল বিভাগের দেয়া সময় শেষ হয়। তবে এর আগের দিন (১১ এপ্রিল) ভবন ভাঙতে পুনরায় এক বছর সময় চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ। অথচ বিজিএমইএ আর সময় চাইবে না বলে মুচলেকা দিয়েছিল। তাই পুনরায় এক বছর চেয়ে করা বিজিএমইএ’র আবেদন প্রত্যাহার চেয়ে এই নোটিশ পাঠান আইনজীবী।

নোটিশে বলা হয়েছে, এর আগে গত বছর ২ এপ্রিল ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না উল্লেখ করে বিজিএমইএ’র দেয়া অঙ্গীকার আবেদন মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত ভবন সরাতে সময় বৃদ্ধি করেন। আর কোনো সময় চাওয়া হবে না বলে অঙ্গীকার দেয়ার পরে যে সময় বৃদ্ধি করা হয় তা গত ১২ এপ্রিল পার হয়েছে। কিন্তু একনজন অ্যাডভোকেট অন রেকর্ডের মাধ্যমে ভবনটি সরাতে আরও এক বছর সময় বাড়াতে একটি আবেদন দায়ের করেছেন। যেটা গত বছরের ২৩ এপ্রিল আপিল বিভাগের দেয়া আদেশের সরাসরি লংঘন। আপনার কার্যক্রম আপিল বিভাগের আদেশের প্রতি অশ্রদ্ধা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে লংঘন যেটা আদালত অবমাননার সামিল। এ অবস্থায় ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সময় চেয়ে করা আবেদন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অন্যথায় আপনার বিরুদ্ধে আদালত অবমানননার মামলা দায়ের করা হবে।

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ওই ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো’ উল্লেখ করে রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে, যা ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হলো।

আদালতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা চেয়ে বিজিএমইএ আবেদন করে, যা ২০১৭ সালের ৫ মার্চ খারিজ হয়। পরে কার্যালয় অন্যত্র সরাতে দু’বার সময় চেয়ে আবেদন করে বিজিএমইএ। দ্বিতীয় দফায় করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ৮ অক্টোবর আপিল বিভাগ সাত মাস সময় দেন, এর পর সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল আরও এক বছর ১০ দিন সময় দেন, যার মেয়াদ গত বছরের ১২ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা ছিল। এ অবস্থায় গত বছরের ৪ মার্চ আরও এক বছর সময় চেয়ে বিজিএমইএ আবেদন করে।

আপিল বিভাগের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে বিজিএমইএ কর্তৃপক্ষ একটি অঙ্গীকারনামা দাখিল করে যে, ভবিষ্যতে আর সময় বৃদ্ধির আবেদন করা হবে না। ওই আবেদন মঞ্জুর করে আপিল বিভাগ আরও এক বছর সময় দেন যা গত ১২ এপ্রিল শেষ হয়। এরপরও ভবন সরিয়ে না নেয়ায় মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) রাজউক ভবনটি (সিলগালা) তালাবদ্ধ করেন।