বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে যারা বদলে দিতে চেয়েছিল তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

নিউজ ডেস্ক: বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে যারা বদলে দিতে চেয়েছিল তাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি– এই মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। যারা ভাষার বিকৃতি ঘটায়, সংস্কৃতিকে বদলে দিতে চায় সেই অপশক্তি এবং এর পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতির আয়োজনে ‘ভারত বাংলাদেশ জাতীয় সাহিত্য উৎসব-২০২৩’ এ তিনি এই কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য যারা আরবি হরফে বাংলা লেখার চেষ্টা করেছিল, যারা ভাষার তথাকথিত ইসলামিকরণের চেষ্টা করেছিল, যারা কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান পূর্ব পাকিস্তানের নিষিদ্ধ করেছিল, বাঙালি না বাংলাদেশি তা নিয়ে যারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকে, তাদের মধ্যে একটি পক্ষ আছে যারা বলে আমি বাংলাদেশি। তারা আসলে কী তারা সেটিও জানে না। যারা আমাদের ভাষার ওপর হিংস্র থাবা দিয়েছিল এবং আমাদের সংস্কৃতিকে কেড়ে নিতে চেয়েছিল এই গোষ্ঠীর প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। এই গোষ্ঠী এখনও তাদের ছায়াতলে সক্রিয়।

তিনি বলেন, তারা ক্ষণে ক্ষণে অহেতুক পাঠ্যপুস্তক নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বাংলা ভাষার নানা বিষয় নিয়ে প্রশ্ন তোলে। এদের সবাই বিএনপি ছায়াতলে থেকে প্রশ্ন তোলে। দেশের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়াতে চায়।

বাংলাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করাই আমাদের লক্ষ্য– এমন মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ৩৫ কোটি বাঙালি সমগ্র পৃথিবীতে বাংলায় কথা বলে। জনসংখ্যার দিক দিয়ে আমাদের ভাষা পৃথিবীর ষষ্ঠতম ভাষা। আমাদের লক্ষ্য বাংলা ভাষাকে জাতিসংঘের দাফতরিক ভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। আর এই লক্ষ্য ও স্বপ্ন নিয়ে আমরা কাজ করছি।

আজ আন্তর্জাতিকভাবে মাতৃভাষা দিবস পালন হচ্ছে কানাডাপ্রবাসী দুই বাঙালি সালাম ও রফিকের উদ্যোগে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি জানান, প্রথমে কানাডার এই দুই প্রবাসী জাতিসংঘে প্রস্তাব পাঠান ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য। তখন জাতিসংঘের থেকে বলা হয়েছিল কোনও ব্যক্তির প্রস্তাব জাতিসংঘ গ্রহণ করবে না। যদি রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয় তাহলে জাতিসংঘ এটা আমলে নেবে। তখন তাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। যদিও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত দিতে হলে এটা সময়ের ব্যাপার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাল বিলম্ব না করে শিক্ষামন্ত্রীকে ইউনেস্কোতে পাঠিয়ে তার সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলেন। পরে ভোটের মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। আর এটি ১৯৯২ সালের কথা।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতির সভাপতি ও পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান।