বন্যার পানিতে ভেসে গেছে নিউ ইয়র্ক, জরুরি অবস্থা জারি

বন্যার পানিতে ভেসে গেছে নিউ ইয়র্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সামূদ্রিক ঘূর্ণিঝড় আইডার প্রভাবে রেকর্ড বৃষ্টিপাত এবং পানির ঢলে বন্যা দেখা দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে এবং নিউ জার্সিতে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে বন্যায় এবং ঝড়ে এপর্যন্ত অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছে।

বন্যায় বহু মানুষ তাদের বাড়ির বেজমেন্টে আটকে পড়েছে। ভেসে যাওয়া একটি গাড়ির ভেতর থেকে একজনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিউ ইয়র্কের মেয়র বিল ডে ব্লাসিও শহরটিতে এখন যেরকম ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে এবং রাস্তায় যেরকম বিপদজনক অবস্থা তৈরি হয়েছে, তাকে এক ‘ঐতিহাসিক আবহাওয়া দুর্যোগ’ বলে বর্ণনা করেছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, সাবওয়ে স্টেশনগুলোতে পানি ঢুকে পড়েছে এবং লোকজনের বাড়িঘর, রাস্তাঘাট সব বন্যায় ভেসে গেছে।

নিউ ইয়র্কের একজন বাসিন্দা জর্জ বেইলি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, এরকম ভয়াবহ বন্যা হবে বলে সে ভাবেনি।

“রাতের খাবার খেতে বসার পর আমি পানির শব্দ শুনতে পাই, আমাদের বাথরুমের শাওয়ারের ড্রেন দিয়ে গল গল করে পানি ঢুকছিল। এরপর আরেক রুমে গিয়ে পানির লাইন পরীক্ষা করছিলাম। কিন্তু যখন আমি বসার ঘরে ফিরে আসলাম, ততক্ষণে সেখানে প্রায় এক ফুট পানি। যেরকম দ্রুত গতিতে পানি ঢুকে সব ভেসে গেল, তা অবিশ্বাস্য।”

নিউ ইয়র্কের পার্শ্ববর্তী নিউ জার্সিতেও জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে এবং সেখানে অন্তত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে।

নিউ জার্সিতে ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত নয়টি বাড়িও ধ্বংস হয়েছে। নিউ জার্সিতে ডাক বিভাগের একটি ভবনের ছাদ ধসে পড়েছে। এসময় ভেতরে লোকজন ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে, তবে কত লোক আহত হয়েছে তা পরিস্কার নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া বিভাগ বলেছে নিউ ইয়র্কের সেন্ট্রাল পার্কে মাত্র এক ঘন্টায় সোয়া তিন ইঞ্চি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

নিউ ইয়র্কের পুলিশ লোকজনকে রাস্তায় না যেতে পরামর্শ দিয়েছে। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, নগরীর নানা প্রান্ত থেকে আসা সাহায্যের আবেদনে তাদের সাড়া দিতে হচ্ছে। নিউ ইয়র্কের সাবওয়ের বেশিরভাগটাই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। নিউ ইয়র্ক এবং নিউ জার্সি থেকে বেশিরভাগ ট্রেন এবং বিমানের ফ্লাইটও বন্ধ রাখা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় আইডা গত রোববার লুইজিয়ানায় আঘাত হানার পর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল ধরে উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল। এই ঘুর্ণিঝড়টি ছিল ক্যাটাগরি ৪ মাত্রার।

ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে লুইজিয়ানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেখানে হাজার হাজার ঘরবাড়িতে এখনো কোন বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। নিউ অরলিন্সে রাত্রিকালীন কারফিউ জারি রয়েছে।

সূত্র: বিবিসি