ফাঁদে ফেলে অর্থ আদায়ই তাদের কাজ

রংপুর সংবাদদাতা: প্রতারণাকে পুঁজি করে আটকের পর চাঁদা দাবি এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রের ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রংপুর মহানগরীর ধাপ গাইবান্ধা বিআরটিসি বাস কাউন্টার সংলগ্ন একটি ভাড়া বাসা এবং শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গতকাল শুক্রবার বেলা ১২টায় মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশিদ।

তিনি জানান, নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শৈলমারী আমচারহাট গ্রামের নজম উদ্দিনের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম পেশায় ব্যবসায়ী। গত ৩ মার্চ দুপুর ২টায় ব্যবসায়ীক কাজে রংপুর শহরের মেডিকেল মোড়ে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা একজন তাকে জানায় যে, সে তার পরিচিত এবং কৌশলে তাকে এবং তার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে নগরীর নুরপুর কবরস্থানের পাশে চারতলা ভবনের একটি রুমে নিয়ে আটকে রাখে। পরে মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মারপিট ও তার কাছ থেকে নগদ আড়াই লাখ টাকা কেড়ে নেয়। এ সময় রিয়াজুলের বন্ধুর গলায় চাকু ধরে চাঁদা দাবি করে। একপর্যায়ে বিকাশের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। ছাড়া পেয়ে পরে রিয়াজুল বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন।

মামলার পর চক্রটিকে ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টায় অপরাধচক্রের মূলহোতা বীনা রানী ওরফে মুক্তা ওরফে সুমীকে রংপুর মহানগরীর ধাপ গাইবান্ধা বিআরটিসি বাস কাউন্টার সংলগ্ন ভাড়াবাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার তথ্য মতে মহানগরীর নুরপুরসহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ চক্রের অপর সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তল্লাশিকালে ১৩টি মোবাইল ফোন, তিনটি এটিএম কার্ড, নগদ ২২ হাজার টাকা জব্দ করা হয়।

ওসি জানান, সংঘবদ্ধ চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অভিনব কৌশলে গ্রামের সহজ সরল লোকজনদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে টাকা আদায় করতো।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি আলমনগর ঘোড়াপীর মাজার এলাকায় একই কায়দায় গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের এক কর্মকর্তাকে জিম্মি করে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে বুথ হতে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে। এছাড়াও তার পরিবারের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩০ হাজার ও নগদ-এর মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকাসহ মোট ৮৫ হাজার টাকা আদায় করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।