প্রয়োজনে আমি পদত্যাগ করতেও রাজি আছি: গোলাম আশরাফ তালুকদার

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর ‘আত্মহত্যা’র ঘটনায় তার সহপাঠীদের দাবিকৃত ছয় দফা দাবির সবগুলোই মানা হবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান গোলাম আশরাফ তালুকদার।

৬ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির গেটে এসে শিক্ষার্থীদের সামনে এ আশ্বাস দেন তিনি।

আশরাফ তালকুদার বলেন, ‘ছাত্রছাত্রী ও প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে প্রয়োজনে আমি পদত্যাগ করতেও রাজি আছি। তারপরও শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব, তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও। ঠিকভাবে পড়াশোনা করে পরীক্ষায় অংশ নাও।’

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান জানান, ছাত্রীরা যেসব দাবি জানিয়েছে, তার মধ্যে প্রায় সবগুলোই একই ধরনের। সব দাবিই মানা হবে। তবে তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার জন্য আহ্বান থাকবে।

এর আগে সকাল থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা গেটের সামনে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান নেয়। তারা সেখানে বিক্ষোভ করতে থাকে।

আন্দোলনরত ছাত্রীদের মধ্য থেকে ছাত্রী প্রতিনিধি আনুশকা রায় ও অধরা অঞ্জলী তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাদের এমন ঘোষণার তিন ঘণ্টার মাথায় প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এসে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেন।

৩ ডিসেম্বর, সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর শান্তিনগরের ২৩/২৪ বাসার একটি কক্ষ থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর পল্টন থানায় অরিত্রী অধিকারীর বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা করেন।

সেই মামলায় তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রিন্সিপালসহ তিনজনকে আসামি করেন। মামলাটি করার পরই সেটি ডিবিতে স্থানান্তর করা হয়।

এর আগে ৩ ডিসেম্বর পরীক্ষায় নকলের অভিযোগে নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী ও মা বিউটি অধিকারীকে ডেকে পাঠায় রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ।

স্কুলে গিয়ে প্রথমে তারা প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রিন্সিপালের কাছে যান। কিন্তু তিনি তাদের অপমান করেন বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগ করা হয়, ওই সময় মেয়ের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) নিয়ে যেতে বলা হয় দুজনকে। পরে অরিত্রীর বাবা-মা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসের কক্ষে যান। সেখানেও মেয়ের সামনেই একই ধরনের আচরণের মুখোমুখি হন তারা।

অরিত্রী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বেরিয়ে দ্রুত বাসায় ফিরে যায়। পরে তার বাবা-মা বাসায় গিয়ে দেখেন, মেয়ে তার কক্ষের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে।