লাগবে না তোর প্রি-পেইড মিটার, ফেরত দে মোর হারিকেন!

২০২১ সালের মধ্যে সরকার দুই কোটি বাড়িতে প্রিপেইড মিটার বসানোর পরিকল্পনা হাতে নিলেও, কারিগরি ত্রুটি, চুরি ও গ্রাহকদের নানা অভিযোগের কারণে বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। প্রিপেইড মিটার ব্যবহারের ক্ষেত্রে কয়েকটি এজেন্সি ও কোম্পানির কাছ থেকে গ্রাহকদের মিটার কেনা ছাড়া উপায় নেই। কারণ, এই ইলেকট্রিক গ্যাজেটগুলো মুক্তবাজারে পর্যাপ্ত পাওয়া যায় না। এছাড়া, প্রিপেইড রিচার্জ কার্ড কিনতে গেলেও অনেক ঝক্কি পোহাতে হয় গ্রাহকদের। রিচার্জ কার্ডও সহজলভ্য নয়।

প্রি পেইড মিটারের অনেক প্রশংসা বাক্য শোনা গেলেও এর সমালোচনাও কম নয়। সামাজিক গণমাধ্যম ফেসবুকেও এটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা কম হয়নি। এরকমই একজন ভুক্তভোগীর অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ‘চাঁদের কিরন’ নামক আইডি থেকে।

লেখাটি সংকলন করে পাঠকদের উদ্দেশ্য হুবহু তুলে ধরা হলো- “প্রি পেইড মিটার কার্ড রিচার্জ করতে গেলাম, ২০০০ টাকা রিচার্জ করলাম। ১৬৮৪ টাকা আমার একাউন্টে জমা হয়েছে। বাকি ৩১৬ টাকা সঙ্গে সঙ্গে গায়েব হয়ে গেছে! সার্ভিস চার্জ নাকি ২০ টাকা। কিসের সার্ভিস চার্জ? যারা ওখানে কাজ করছে তাদের? অফিস ভাড়া? কর্মচারীদের বেতন? সেটা কি সরকার দিচ্ছে না? এসবের কোন একটা হলেও, সেটা আমি কেন দিবো? আগের মতো বাড়ি বাড়ি মিটার রিড করার ব্যাপার নাই। তাহলে সার্ভিসটা কিসের! ডিমান্ড চার্জ ১২০ টাকা। কিসের ডিমান্ড? কার ডিমান্ড? কে ডিমান্ড করেছে? আমি অনেক চেষ্টা করেও এই লাইনের অর্থ উদ্ধার করতে পারি নাই। ভ্যাট ৯৫ টাকা! সরকার জনগণের টাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে, অথবা ক্রয় করছে। সেই বিদ্যুৎ আবার জণগনের কাছে অত্যন্ত উচ্চমূল্যে বিক্রি করছে। বছর বছর সেই বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে। আমার টাকায় কেনা বিদ্যুৎ আমার কাছে বিক্রি করছে, আবার সেই বিদ্যুতের দামের উপর ভ্যাট? এটা কেমন কথা?

এর পরেরটা আরও অদ্ভুত! আমাকে জোর করে একটা মিটার ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি তো চাইনি এই প্রি-পেইড মিটার? এখন আমার কাছ থেকে আবার সেই মিটারের দাম রাখা হচ্ছে। আমি তো এই বাসায় ভাড়াটিয়া, যদি মিটারের দাম কেউ দিতে হয়, তাহলে সেটা হয়তো সরকার দেবে অথবা বাড়িওয়ালা দেবে। আমি কেন দেবো? আমি কি এই বাসা ছেড়ে যাওয়ার সময় এই মিটার খুলে নিয়ে যাবো??? ২০০০ টাকা অগ্রিম দেয়ার পর যদি ৩১৬ টাকা নাই হয়ে যায়!!! খুব গায়ে লাগে না বলুন তো? প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা! পেঁয়াজের কেজি ৮০/৯০ টাকা! চালের দামের কথা আর নাই বা বললাম। এই শহরে, যেখানে ৩৮ ভাগ মানুষ বস্তিতে থাকে, তার ঘর সংসার কে সামলাবে? কোত্থেকে আসবে এত রোজগার? তাই বলছি- লাগবে না তোর প্রি-পেইড মিটার, ফেরত দে মোর হারিকেন।”