নির্বাচন করতে পারবেন না বিএনপির কেন্দ্রীয় ৫ নেতা

দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলার সাজা স্থগিত চেয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় ৫ নেতার করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ কারণে তারা নির্বাচন করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আদালত।

দণ্ড স্থগিতের আবেদন বাতিল হওয়া নেতারা হলেন-বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও চিকিৎসকদের নেতা ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মো. মশিউর রহমান, খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক এমপি ওয়াদুদ ভূঁইয়া এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. আবদুল ওহাব।

মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ দণ্ড স্থগিত চেয়ে এই ৫ জনের করা আবেদন খারিজের আদেশ দেন।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, আপিল পেন্ডিং অবস্থায় সাজা স্থগিতের বিধান নেই। ফলে তারা (৫ বিএনপি নেতা) নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

আদালতে ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আহসানুল করীম ও খায়রুল আলম চৌধুরী।

আমানউল্লাহ আমানের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী জাহিদুল ইসলাম।

ওয়াদুদ ভুঁইয়া ও আবদুল ওহাবের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও ব্যারিস্টার একেএম ফখরুল ইসলাম।

মশিউর রহমানের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও ব্যারিস্টার মাহবুব শফিক।

আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আমানউল্লাহ আমানকে দুর্নীতির মামলায় ২০০৭ সালের ২১ জুন বিচারিক আদালত ১৩ বছরের সাজা দেন। পরে তিনি আপিল করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, তথ্য গোপন ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ৩৬ লাখ ২৯ হাজার ৩৫৪ টাকার সম্পদ অর্জন করায় ওয়াদুদ ভুঁইয়াকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্পেশাল জজ ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন। তিনি এ বিষয়ে আপিল করে ২০০৯ সালের ২৮ এপ্রিল জামিন লাভ করেন।

এ ছাড়া জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৯৩ লাখ ৩৬৯ টাকার সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপন করে মো. আবদুল ওহাবকে যশোর স্পেশাল জজ গত বছরের ৩০ অক্টোবর ৮ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৩০ হাজার টাকার জরিমানা দিয়েছেন। তিনি এ বিষয়ে আপিল করে ৬ ডিসেম্বর জামিন নিয়েছেন।

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জনের অভিযোগে ২০০৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় কুষ্টিয়ার তৎকালীন সহকারী পরিচালক মোশরাফ হোসেন মৃধা মামলা করেন।

এ মামলায় ২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর ঝিনাইদহ-২ (সদর ও হরিণাকুণ্ডু) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমানকে পৃথক ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

একই সঙ্গে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০ কোটি ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৩৩০ টাকার সম্পদ বাজেয়াফতের নির্দেশ দেন আদালত। পরে তিনি আপিল করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন।