দ্রুত পতন হচ্ছে ভারতের অর্থনীতি

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ডেস্ক: এক সময় নিজেদের উদীয়মান অর্থনীতির দেশ বলে দাবি করতো ভারত। কিন্তু দুর্বল মুদ্রা বাজারের প্রভাবে দেশটি তার এ অবস্থান হারিয়ে ফেলছে। এমনকি ভারতের প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টাই বলছে, আগামী বছর দেশের প্রবৃদ্ধি গতিশীলতা অনেকটাই মন্থর হয়ে পড়বে এবং তা ৭ শতাংশে নেমে আসতে পারে। খবর ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও রয়টার্স।

চলতি বছর রুপির মান প্রায় ৪ শতাংশ কমে যায়, যা ডলারের বিপরীতে রুপির এ যাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ দরপতন। শুধু তা-ই নয়, চলতি বছরের এ পর্যন্ত উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে ভারতের মুদ্রাই সবচেয়ে নাজুক অবস্থানে রয়েছে। রুপির এ অবনমনে ভারতের মারাত্মক ঋণগ্রস্থ কোম্পানিগুলো নিয়ে আশঙ্কা আরো বেড়ে গেছে। দেশটির এ ধরনের অনেক কোম্পানিই কয়েক বছর আগে অর্থনৈতিক সংকট থেকে নিজেদের এখনো পুরোপুরি বের করে আনতে পারেনি। বরং এসব কোম্পানির এখন ডলারে নেয়া ঋণের আকার আরো বেড়ে যাবে। এরই মধ্যে কিছু কোম্পানির আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে।

ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা ফিচ গ্রুপের শাখা ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চের জ্যেষ্ঠ পরিচালক রাকেশ বলেছে, ভারতের করপোরেট খাত এখন শ্লথ পুনরুদ্ধারের মধ্যে রয়েছে। এ রকম একটি পরিস্থিতিতে রুপির অবমূল্যায়নই সম্ভবত সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হয়ে সামনে আসছে। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, ডলারের বিপরীতে রুপির মান ১ শতাংশ কমলে ভারতের ৫০০টি ঋণগ্রস্থ কোম্পানির পরিচালন মুনাফা দশমিক ১৯ শতাংশ হ্রাস পায়।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারে রুপির মান ছিল ৬৮ দশমিক ৭৬, যা রেকর্ড দুর্বলতর হিসাব ৬৮ দশমিক ৮০ রুপির তুলনায় বেশি তা।

এদিকে উদীয়মান দেশগুলোর ঋণ ক্রমেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে। কারণ শ্লথ প্রবৃদ্ধি ও মুদ্রা বাজারের দুর্বলতার মধ্যে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে উন্নয়নশীল দেশের কোম্পানিগুলো দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ গ্রহণ করেছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে আগামী চার বছরের মধ্যে ১০ হাজার কোটি ডলার সমমূল্যের করপোরেট ঋণ (যার ৬০ শতাংশই ডলারে নেয়া) পরিশোধযোগ্য হবে। বিদেশ থেকে নেয়া ভারতের ঋণও বাড়ছে। গত বছরের মার্চ পর্যন্ত বহির্বিশ্ব থেকে নেয়া ঋণ বেড়ে ১৮ হাজার ১০০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। ২০০৫ সালের দুই হাজার ৬০০ কোটি ডলারের তুলনায় যা অনেক বেশি। এছাড়া চলতি বছরই ভারতে ৬৫০ কোটি ডলারের ডলারনির্ভর করপোরেট বন্ড ম্যাচিউর হবে।