দেশের ছেলেরা পাচ্ছে না চাকরি, ভারতের কর্মীরা নিয়ে জাচ্ছে ১০ বিলিয়ন ডলার

নিউজ ডেস্ক : সরকারের প্রতি অভিযোগ তুলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার দেশের শিক্ষিত বেকার যুবকদের চাকরির ব্যবস্থা করছে না। দেশের বেকার যুবকরা চাকরি পাচ্ছে না। অথচ একই সময়ে আজকে ভারত থেকে কর্মীরা এসে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর লেডিস ক্লাবে ডক্টর অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) কেন্দ্রীয় সম্মেলন-২০১৯ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সুপরিকল্পিতভাবে দেশকে পরনির্ভরশীল দেশে পরিণত করছে। কর্মসংস্থানের হার নিচের দিকে নামছে। একদিকে উন্নয়নের কথা বলে, অন্যদিকে আমাদের ছেলেদেরকে চাকরি দেয় না। অথচ একই সময়ে ভারত থেকে আসা কর্মীরা এখানে কাজ করছেন। এতে প্রমাণ হয়, বাংলাদেশে এখন যারা সরকার, তারা জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তারা প্রকৃতপক্ষে এই দেশের জনগণের সরকার নয়। এরা পুতুল সরকারে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে দুঃসময় ও কঠিন সংকটময় মুহূর্তে চলছে। আমার মনে করি গণতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে একটি দেশের উন্নয়ন হতে পারে। তা আজকে একটি কঠিন পরীক্ষার মধ্যে আছে। দেশে এখন সব সময় উন্নয়নের ঢোল বাজানো হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক সংবাদ সন্মেলনে বলেছেন- উন্নয়ন পেতে হলে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিকে মেনে নিতে হবে, অর্থাৎ মূল্য দিতে হবে। অবশ্যই আমার জানি ডেভেলপমেন্ট একটা মূল্য দিতে হয়। কিন্তু সেই মূল্য কাকে দিতে হয়? সেই মূল্য দিতে হয় সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য। কিন্তু আমার খুব ভালোভাবে দেখছি, উন্নয়নের কথা বলে জনগণের পকেট থেকে যে টাকা বের করে নেওয়া হচ্ছে, তা ব্যয় হচ্ছে শুধুমাত্র গুটিকয়েক ক্ষমতাসীন দলের সুবিধার জন্য।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব ভালো করে জানি, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়েছে কেন। এলএনজি আমদানি করে ভুর্তকি দেওয়ার জন্য। এলএনজি কারা আমদানি করছে? সরকারের সঙ্গে যারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত, যারা মন্ত্রী বা উপদেষ্টা বা অত্যন্ত প্রিয়ভাজন তাদের জন্য এই বাড়তি খরচ জনগণকে করতে হবে।

বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় দাবি করে তিনি বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি হলে বা ভ্যাটের পরিমান বাড়লেও, মানুষের আয় না বাড়লে তাদের কিছু আসে যায় না।

সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের হুকুমে বিচারক বিচারের হুকুম বা রায় দিতে হয় দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৯৪ সালে পাবনায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ওপর হামলা হয়েছিল। কিন্তু কোনও হতাহত হয়নি। আমরা যেকোনও হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দা করি। কিন্তু যেখানে কোনও হতাহত হয়নি, সেখানে ৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ২৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১৩ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের শাস্তি দিয়েছে। এটাই হচ্ছে বিচার বিভাগের অবস্থা।

জনগণকে জাগিয়ে তুলতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠাতে হলে জনগণের ঐক্যের খুব প্রয়োজন। সমস্ত দলমতকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যারা দেশের গণতন্ত্রকে বিনষ্ট করছে তাদেরকে পরাজিত করতে হবে।

একই অনুষ্ঠানে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আগে অবশ্যই আমাদের দলের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেভাবে ড্যাব তাদের সংগঠনের মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে।

ড্যাবের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ড্যাবের সাবেক নেতা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ড্যাবের বর্তমান সভাপতি হারুন আল রশিদ, মহাসচিব ডা. আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।