তিস্তার চরাঞ্চলে সবুজের সমারোহ

গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা এখন সবুজের সমারোহে ভরে উঠেছে। তিস্তার বুকজুড়ে জেগে উঠেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমি।

ভূমিহীন পরিবারগুলো চরে ফিরে এসে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। শীতকালীন শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসলে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, শ্রীপুর, চণ্ডীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, ভরা রাক্ষসী তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। চরাঞ্চলের প্রায় ৪০টি চরের মধ্যে এখন বেগুন, শিম, ভুট্টা, পেঁয়াজ, আলু, সরিষা, মুলা, কপি, মরিচ, রসুন, তিল, তিসি, লাউশাক, পালংশাক, লালশাক, লাফাশাক, কুমড়া, করলা, আদা, গম, ডাল চাষাবাদ হচ্ছে।

চণ্ডীপুর চরাঞ্চলের কৃষক জয়নাল মিয়া, আবেদ আলী ও মতি উল্লাহ ব্রেকিংনিউজকে জানান, ‘দিনরাত পরিশ্রম করে তিস্তার বুকে নানান ফসলের চাষাবাদ করছেন তারা। বর্তমানে শীতকালীন শাক-সবজিতে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল, যা বিক্রি করে চরাঞ্চলের অনেকে দিন গুজরান করছেন।’

হরিপুর চরাঞ্চলের শহিদুল ইসলাম ব্রেকিংনিউজকে জানান, ‘চলতি মৌসুমে এক বিঘা জমিতে মুলাশাক, এক বিঘা জমিতে সরিষাশাক এবং এক বিঘা জমিতে ছিটা পেঁয়াজের চাষাবাদ করেছেন। এরই মধ্যে মুলা এবং সরিষা-শাক বিক্রি করেছেন ৩০ হাজার টাকার। ওই জমিতে আরও ৫ হাজার টাকার শাক বিক্রি করা যাবে। ছিটা পেঁয়াজ সবেমাত্র গুটি হয়েছে। আগামী ২০-২৫ দিনের মধ্যে বিক্রি শুরু করবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি ৩০ হাজার টাকার ছিটা পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারব। তিন বিঘা জমিতে চাষাবাদে আমার খরচ হয়েছে ১০ হাজার টাকা।’

তারাপুর চরের কৃষক সাইফুল ব্রেকিংনিউজকে জানান, ‘১০ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছি। এরই ধ্যে বেগুন বিক্রি করেছি ১০ হাজার টাকার। এখন জমিতে থাকা বেগুন বিক্রি করে যা পাব তাই লাভ হবে।’

সুন্দরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম ব্রেকিংনিউজকে জানান, ‘পলি জমে তিস্তার চরাঞ্চল এখন অত্যন্ত উর্বর হয়ে উঠেছে, যার কারণে যে কোনো প্রকার ফসল অত্যন্ত ভালো হচ্ছে। চরাঞ্চলের কৃষকরা আজ নানাবিধ ফসল চাষাবাদ করে স্বাবলম্বী। এসব চরাঞ্চলের কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হয়।’