‘তলাবিহীন ঝুড়ি’তে এখন বিদেশি মুদ্রা উপচে পড়ছে: গভর্নর

গভর্নর বলেন, “প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স আমাদের অর্থনীতির অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছে। বর্তমানে বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশে কর্মরত প্রায় ৯৫ লাখ প্রবাসী বছরে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন ১৫ বিলিয়ন ডলারের বেশি।”

রেমিট্যান্স আহরণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে সপ্তম এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বলে জানান আতিউর রহমান।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই গভর্নর বলেন, “স্বাধীন হওয়ার পর মাত্র সাত কোটি মানুষের খাদ্যের জন্য বাংলাদেশকে বিদেশে হাত পাততে হতো। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই। বর্তমানে বছরে তিন কোটি ৮৪ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে।

“বাংলাদেশ এখন আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ নয়; বরং বাংলাদেশের ওই ঝুড়ি এখন খাদ্য ও বিদেশি মুদ্রায় পরিপূর্ণ হয়ে উপচে পড়ছে।”

একাত্তরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ। যুদ্ধবিধ্বস্ত সদ্য স্বাধীন দেশে রাস্তাঘাটসহ নানা ধরনের অবকাঠামো সমস্যা ছাড়াও পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন না থাকায় দুর্ভিক্ষের মুখোমুখিও হয় বাংলাদেশ।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে আখ্যায়িত করেছিল।

এ অবস্থা থেকে খাদ্য উৎপাদন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে দেশটি। বাংলাদেশ ২০১৫ সালের অক্টোবরে প্রথমবারের মতো সর্বোচ্চ ২৭ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভের মাইলফলক স্পর্শ করে। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার রিজার্ভ আবারও ২৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

রিজার্ভ বাড়ার পেছনে দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের অবদান রয়েছে বিশেষভাবে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১৫ বিলিয়ন ডলার।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেও রেমিটেন্সের এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। এই ছয় মাসে সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা,যা গত অর্থবছরের একই সময়ের প্রায় সমান।