টিকা নেওয়ার ১২ দিন পর মারা গেলেন ব্যবসায়ী

টিকা নেওয়ার ১২ দিন পর মারা গেলেন ব্যবসায়ী

নিউজ ডেস্ক: মাদারীপুরে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর উপসর্গ নিয়ে মারা গেলেন বিল্লাল সরদার (৪৮) নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নের মধ্য পেয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দিা ছিলেন। স্থানীয় চরমুগরিয়া বন্দরের থাই ও অ্যালমুনিয়াম ব্যবসা করতেন বিল্লাল।

জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের পর গত ২২ ফেব্রুয়ারি জেলা সদর হাসপাতালের করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক ভ্যাকসিন (টিকা) গ্রহণ করেন ব্যবসায়ী বিল্লাল সরদার। পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি তার জ্বর হয়। এতে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করেন তিনি। ৪ দিনেও জ্বর না কমলে পরবর্তীতে গলাব্যথা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। একপর্যায়ে গত ২ মার্চ শহরের বাবু চৌধুরী জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক টিএম সাহিন ইকবালের মাধ্যমে তিনি চিকিৎসাও নেন।

পরে অবস্থার অবনতি হলে গত ৬ মার্চ জেলা সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। শনিবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান বিল্লাল। পরে শনিবার রাতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বিল্লালের দাফন সম্পন্ন হয়।

খবর পেয়ে রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিভিল সার্জন ডা. সফিকুল ইসলাম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্ভিরেন্ট অ্যান্ড ইমোনাইজেশন মেডিকেল অফিসার (সিমু) ডা. বিকাশ চন্দ্র দাস, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর মাদারীপুরের সহকারী পরিচালক মহেশ্বর কুমার মণ্ডল, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইকরাম হোসেন, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. এইচএম খলিলুজ্জামানসহ স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

বিল্লাল সরদারের ছেলে সাগর সরদার বলেন, আমার বাবা টিকা নেওয়ার পর অসুস্থ হলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। একপর্যায়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি। কিন্তু কী কারণে বাবা মারা গেলেন কিছুই বুঝতে পারছি না।

সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. এইচএম খলিলুজ্জামান জানান, গত ৫ মার্চ সদর হাসপাতাল থেকে বিল্লাল সরদারের করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ৬ মার্চ করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। টিকা নেওয়ার পর বিল্লাল সরদার মারা যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক অভিজ্ঞ প্রতিনিধি কাজ করছেন। তার অন্য কোনো রোগ ছিল কি না কিংবা অন্যকোনো কারণে তার মৃত্যু হয়েছে কি না সেগুলো নিয়ে অভিজ্ঞরা মাঠে কাজ শুরু করেছেন।

মাদারীপুরের স্বাস্থ্য বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তা (সিভিল সার্জন) ডা. সফিকুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নেওয়ার পর প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৩০ মিনিট হাসপাতালে বিশ্রামের জন্য রাখা হয়। যদি কারও ৩০ মিনিটের মধ্যে অসুবিধা হয় কিংবা তাৎক্ষণিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তাহলে নিয়ম মতো স্বাস্থ্যগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বিল্লাল সরদার টিকা গ্রহণ করার পর উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার বিষয়টি মাথায় নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের একাধিক দল কাজ করছে। রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ড. রহিমা খাতুন বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপর্যায়ে অবগত করা হবে। কী কারণে তিনি মারা গেলেন স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে পরীক্ষার পরে বলা যাবে।