ঝড়ে ডুবতে বসেছে মার্কিন অর্থনীতি, তুষারপাতের পর এসেছে নতুন ঝড়

snow_storm_usa

ডেস্ক:  তুষারপাতের ধাক্কা এখনো সামলে উঠতে পারেনি মার্কিন অর্থনীতি। এর মধ্যে শুরু হয়েছে ঝড়। পর পর দুটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে দিনের পর দিন দোকানপাট বন্ধ রয়েছে, হোটেলগুলোয় অতিথি আসছে না, আর সরকারি সংস্থাগুলোকে বরফ সরাতে বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। বিশ্লেষকরা বলছে, এবার প্রাকৃতিক ঝড়েই ডুববে মার্কিন অর্থনীতি। খবর ওয়াশিংটন পোস্টের।

কয়েক দিন ধরেই জমে থাকা বরফ পরিষ্কারের কাজ করতে হয়েছে সরকারি সংস্থাগুলোকে। এতে ঠিকাদার তো বটেই, এ কাজে সাহায্যকারী পুলিশ ও অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের ওভারটাইম বাবদ লম্বা বিল জমে রয়েছে। কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় সরকার বলছে, এ বাবদ কত খরচ হবে, সে হিসাব তারা এখনো করে উঠতে পারেনি। কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, তুষারপাতের কারণে জাতীয় অর্থনীতি কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা বের করতে কয়েক মাস লেগে যাবে।

অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, গত সপ্তাহের প্রায় পুরোটা সময় ইস্ট কোস্ট অঞ্চলের বিমানবন্দর, পরিবহন ব্যবস্থা, মহাসড়ক, ব্যবসা ও শিক্ষা ব্যবস্থা ঝড়ের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল। এতে আর্থিক ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমসস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আবহাওয়াবিদ পল কোচিন এ প্রসঙ্গে জানায়, আশঙ্কা করা হচ্ছে ঝড়ের কারণে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন ডলার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। যা যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের চেয়ে অনেক বেশি। কয়েক দিন ধরে ঝড়ের ভুক্তভোগী ছিল তিন থেকে পাঁচ কোটি মানুষ। এর আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির আকারটিও কম হবে না।

ঋণমান নিয়ন্ত্রক সংস্থা মুডি’সের এক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তুষারঝড়ের কারণে উৎপাদন সক্ষমতা হ্রাস ও ব্যয়ের ওপর যে প্রভাব পড়েছে, তার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। সংস্থাটির হিসাবে ওয়াশিংটনে শুধু ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযিম (সোমবার)-ই যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, তার আকার কমপক্ষে ৫৭ কোটি ডলার হবে। যা ঝড় শুরু হওয়ার প্রথম দিন থেকে তিনদিনের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। অন্যদিকে নিউইয়র্ক মেট্রোপলিটন অঞ্চলের অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এ অঞ্চলের মোট অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ৭ শতাংশ; যার আর্থিক অঙ্ক ৪৬ কোটি ডলার।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত হে-অ্যাডামসের মহাব্যবস্থাপক হ্যানস ব্রোল্যান্ড বলেছে, দুর্যোগের সময়টিতে তার হোটেলে বিভিন্ন ব্যবসায়িক বৈঠক, সামাজিক অনুষ্ঠান বাতিলসহ অতিথিরাও বুকিং বাতিল করেছে। তবে লোকসানের নির্দিষ্ট অঙ্ক প্রকাশ করেনি সে।

অন্যদিকে পরিবহন সংস্থা মেট্রো জেনারেলের ম্যানেজার পল জে. ওয়েডেফিল্ড জানায়, ঝড়ের সময় দুদিন তাদের কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এতে তাদের প্রায় ৭০ লাখ ডলার ক্ষতি হয়েছে।
ঝড়ের সময় সাধারণ মানুষ খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে পা রাখেনি। ফলে দেখা গেছে, এ সময় গাড়ির মতো বড় ভোক্তাপণ্য বিক্রি হয়নি। জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ স্টিফেন ফোলার জানায়, অর্থনীতির প্রায় সিংহভাগ এখন ভঙ্গুর। সাধারণ মানুষকে পরিস্থিতি সামলে নিতে এখনো কাজ করে যেতে হচ্ছে। -ওয়াশিংটন পোস্ট