জম্মু-কাশ্মীরে, নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল গড়ার নামে নীল নকশা আঁকছে ভারত

জম্মু-কাশ্মীরে, নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল গড়ার নীল নকশা আঁকছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জম্মু অঞ্চলের উপর কাশ্মীরের ‘আধিপত্যের’ ইতি টানার জন্য জম্মু ও কাশ্মীরকে আবারও ভাগ করে নতুন প্রশাসনিক অঞ্চল গড়ার সব প্রস্তুতি শেষ করেছে ভারত সরকার।

উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে যে, পরিকল্পনা প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং চলতি মাসের শেষের দিকে বা আগামী বছরের শুরুর দিকে এটা বাস্তবায়িত হতে পারে।

সূত্র বলেছে যে, জম্মু অঞ্চলের তিনটি জেলা এবং কাশ্মীরের তিনটি জেলাকে নিয়ে নতুন অঞ্চল গঠনের পরিকল্পনা প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং শিগগিরই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হবে। এই সবগুলো জেলায় হয় পির-পাঞ্জাল অঞ্চলের অন্তর্গত বা তার আশেপাশে অবস্থিত।

জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের এক কর্মকর্তা বলেছে, “সিদ্ধান্ত নেয়া হয়ে গেছে এবং এ ব্যাপারে খুঁটিনাটি কাজ চলছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে চেনাব উপত্যকার মতো জম্মুর অবহেলিত অংশগুলোর উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে”।

“তবে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই সিদ্ধান্তের ফলে অন্য অংশ – বিশেষ করে জম্মু অঞ্চলের উপর কাশ্মীরের আধিপত্য আরও কমে আসবে, কারণ নতুন এই বিভাজনের কারণে কাশ্মীরের জনসংখ্যার মানচিত্র বদলে যাবে”।

সূত্র আরও জানিয়েছে যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা নিয়ে এরই মধ্যে অনেকখানি এগিয়ে গেছে। জম্মু অঞ্চলের উপর কাশ্মীরের কর্তৃত্ব শেষ করার জন্য এটাকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন বিজেপি।

জম্মু ও কাশ্মীরের কর্মকর্তা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে এই ইস্যু নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও হয়েছে বলে জানা গেছে।

জম্মু ও কাশ্মীরের সিনিয়র এক বিজেপি নেতা পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে বলেছে, “কাশ্মীরীরা এই অঞ্চলকে শাসন করে আসছিল এই কারণে যে, জম্মুর চেয়ে তাদের অঞ্চলে বেশি পার্লামেন্টারি আসন রয়েছে। কিন্তু বিজেপি এই তথাকথিক বৈষম্যের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে”।

অবিভক্ত জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে অ্যাসেম্বলির ৮৭টি আসনের মধ্যে কাশ্মীর অঞ্চলের রয়েছে ৪৪টি আসন এবং জম্মুর রয়েছে ৩৭টি আসন। লাদাখ অঞ্চল থেকে এমএলএ নির্বাচিত হন চার জন।

নতুন এই বিভাজনের মধ্যে জম্মু অঞ্চলের রামবান, কিশতওয়ার এবং দোবা জেলা এবং কাশ্মীরের শোপিয়ান, অনন্তনাগ এবং কুলগাম জেলা থাকতে পারে।

সূত্র জানিয়েছে যে, এই বিভাজনের কারণ হিসেবে যদিও পাহাড়ি এলাকায় প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টিকে উল্লেখ করা হচ্ছে, তবে এর আসল কারণ হলো রাজনৈতিক। বিজেপি যাতে নতুন এই অঞ্চল বিভাজন থেকে ভোটে আরও লাভবান হতে পারে, সেজন্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে।