জঙ্গলেই জুমুয়ার নামাজ শরণার্থীদের

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ডেস্ক: ফ্রান্স কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উচ্ছেদকৃত ক্যালাইস জঙ্গলের শরণার্থী ক্যাম্পে অবস্থানরত কয়েক হাজার মুসলিম শরণার্থী গতকাল শুক্রবার জঙ্গলেই জুমার নামাজ আদায় করেছেন। ব্রিটিশ ডেইলি মেইল পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, তেরপল দ্বারা তৈরি অস্থায়ী তাবুর পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে জুমার নামাজ আদায় করছেন শরণার্থীরা।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জঙ্গলের দক্ষিণ অংশের বসতি উচ্ছেদ করতে কমপক্ষে এক মাস সময় লাগতে পারে। তবে ওই অংশে বসবাসরত অভিবাসীদের কি হবে তা এখনো জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় কর্মকর্তা ভিনসেন্ট বার্টন বলেন, ‘আমরা তাড়াহুড়া করছি না। কিছু অংশ অত্যন্ত দুর্গম। আমরা অবশ্যই ভদ্রোচিত ও মানবিকতার সাথে কাজ করবো’।
ওই অঞ্চলের স্থানীয় কাউন্সিলররা শরণার্থীদের জঙ্গল ছেড়ে ফ্রান্সের সরকারি ভবনে বা জঙ্গলের নিকট জাহাজের কন্টেইনারগুলোতে আশ্রয় নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু শরণার্থীরা আশঙ্কা করছেন ফরাসি দপ্তরে বা জাহাজের কন্টেইনারে আশ্রয় নিলে তাদেরকে ফরাসি আশ্রয় প্রার্থী হিসেবে নিবন্ধন করতে বাধ্য করা হবে এবং তাদের ব্রিটেন পাড়ি জমানোর স্বপ্নের মৃত্যু ঘটবে। তাই অনেকেই ফরাসি উপকূল সংলগ্ন জঙ্গলের আরো গভীরে আশ্রয় সন্ধান করছেন।

জঙ্গলেই জুমার নামাজ শরণার্থীদের2
বর্তমানে এই আশ্রয় শিবিরে ৩,৮০০ লোক অবস্থান করছেন যেখানে গতবছর এ সংখ্যা ছিল প্রায় ৬,০০০। ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নাড কাজেনুভ জানান, বাকিদেরকে ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে পুনর্বাসন করা হয়েছে।
তিনি জানান, ফ্রান্স জুড়ে শরণার্থীদের আবাসস্থল হিসেবে প্রায় ১০২ টি আশ্রয় শিবির স্থাপন করা হয়েছে এবং তারপরও চরমপন্থীরা প্রতিবাদের নামে ধ্বংসাত্নক কর্মকাণ্ডে যোগ দেয়ার জন্য শরণার্থীদের উস্কানি প্রদান করছে।
এদিকে, আশ্রয় শিবিরে অবস্থানরত ১২ জন ইরানি শরণার্থী ‘জঙ্গল উচ্ছেদে’র প্রতিবাদে নিজেদের মুখ সেলাই করে বন্ধ করে দিয়েছেন। ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের প্রতি ‘সহানুভূতি ও দুঃখ’ প্রকাশ করেছেন।
গতকাল তৃতীয় দিনের মত ফরাসি দাঙ্গা পুলিশ জঙ্গলে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত মধ্যপ্রাচ্য ও দারিদ্র্য জর্জরিত উত্তর আফ্রিকার কয়েক হাজার শরণার্থী উন্নত জীবনের আশায় ব্রিটেনে পাড়ি জমানোর প্রত্যাশায় গতবছর থেকে ফ্রান্সের ‘জঙ্গল’ ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন। ফ্রান্স সরকার এ সপ্তাহে জঙ্গলে উচ্ছেদ অভিযান চালালে শরণার্থীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
ক্যালাইস জঙ্গলের নিকটবর্তী স্যান্টি শহর ফ্রান্স ও ব্রিটেনের কূটনৈতিক ফ্লাশ পয়েন্ট। এখানকার করিডোর দিয়ে ব্রিটেনে প্রবেশের অপেক্ষায় দুর্গম জঙ্গলে মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজার হাজার শরণার্থী।
সূত্র: ডেইলি মেইল