চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় যাচ্ছে বিদেশে

চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী খেজুরের গুড় যাচ্ছে বিদেশে

চুয়াডাঙ্গা সংবাদদাতা: চুয়াডাঙ্গায় চলছে শৈত্যপ্রবাহের লাগাতার সিগনাল। প্রচন্ড শীতে এলাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবন কিছুটা বিঘিœত হলেও চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়ের স্বাদ ও গন্ধে জেলার আকাশ-বাতাস এখন ভরে আছে। শীতকালীন নানা স্বাদ মেটাতে চুয়াডাঙ্গার খেজুর গুড়ের যেমন তুলনা হয় না, তেমনি এ জেলার খেজুর গুড়ের স্বাদ নিতে দেশ-বিদেশের মানুষও অপেক্ষা করে থাকে।

শীতের এখনো বেশ কিছুদিন বাকি। তবে এই মুহূর্তে চুয়াডাঙ্গার ঐতিহ্যবাহী সরোজগঞ্জের খেজুর গুড়ের হাট জমে উঠেছে। চাহিদা বেশি হওয়ায় কৃষক তাদের উৎপাদিত গুড় নিয়ে আসছেন জেলা সদরের সরোজগঞ্জের হাটে। স্বাদে ও গন্ধে গুড় অতুলনীয় হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন বেপারীরা। প্রতি সপ্তাহে হাটে প্রায় দুই কোটি টাকার মতো গুড় বেচা-কেনা হয়। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়।

জেলা সদরের কুতুবপুর ইউনিয়নাধীন সরোজগঞ্জ বাজারে সপ্তাহে সোমবার ও শুক্রবার এ গুড়ের হাট বসে। হাটে সারি সারি সাজানো থাকে গুড়ের ভাঁড়গুলো। গুড়ের স্বাদ ও রং অতুলনীয়। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত শত শত কৃষক, বেপারী ও শ্রমিকদের উপস্থিতিতে হাট এলাকা সরগরম থাকে। এক ভাঁড় গুড় আকার ভেদে বিক্রি হয় ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায়। বেপারীরা নলেন ও ঝোলা গুড় দেখে দরদাম ঠিক করে ওজন দিয়ে ট্রাকে লোড করেন। গুড়ের হাটে সপ্তাহে ৩৭ থেকে ৪০ ট্রাক গুড় কিনে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন জেলার বেপারীরা। সপ্তাহে দুই দিনে প্রায় দুই কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয় হাটে। প্রতি মৌসুমে অর্ধশত কোটি টাকার বেশি গুড় বেচাকেনা হয়। স্থানীয় কুতুবপুর ইউনিয়নের তরুণ চেয়ারম্যান আলী আহম্মেদ হাসানুজ্জামান মানিক জানান, এ হাটের গুড়ের মান অত্যন্ত ভালো, সুস্বাদু ও মুখরোচক।

এলাকার খেজুরগাছ চাষিরা খুব যত্ন সহকারে গাছকাটা থেকে শুরু করে গুড় তৈরি ও ভাঁড় জাতকরণ করে থাকেন। ভেজালমুক্ত হওয়ায় এখানকার গুড়ের দাম একটু বেশি। সে কারণে দেশে এর চাহিদার পাশাপাশি বিদেশেও দিন দিন চাহিদা বাড়ছে। রপ্তানিও হচ্ছে বিদেশে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, কানাডা, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, সৌদি আরব, ইরান-ইরাকসহ পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে এ ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড় পাঠানো হয়ে থাকে। সরোজগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি শেখ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, এখানে প্রতি হাটে ২০০ মেট্রিক টন গুড় বিক্রি হয়। এ হাটটি অনেক পুরাতন। প্রতি সপ্তাহে জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় গুড় পাঠানো হয়।