চট্টগ্রামে মসজিদ উচ্ছেদের চেষ্টা, দফায় দফায় বিক্ষোভ

নিউজ নাইন২৪, চট্টগ্রাম: মহানগরীর ২৫ বছর পুরোনো একটি জামে মসজিদ উচ্ছেদ করে মসজিদের জায়গা দুই ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দিয়েছেন গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। জায়গা লীজ পেয়ে এখন তারা মসজিদ ও আরবি শিক্ষা কেন্দ্র ভেঙ্গে জায়গাটি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমন অভিযোগে প্রতিনিয়ত এলাকায় বিক্ষোভ ও প্রতিবাদী মিটিং -মিছিল করছেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার মসজিদের জায়গা উচ্ছেদ করে দখলে নিতে পুলিশ গেলে এলাকাবাসী প্রতিরোধ করে। বর্তমানে মসজিদের সামনে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২৫ বছর আগে সরকারি জাগায় নির্মিত হয় মেহেদিবাগ শহীদ মির্জা লেন জামে মসজিদ। এলাকাবাসীর উদ্যোগে এ মসজিদটি নির্মিত হয়। পরে মসজিদের একটি অংশের জায়গায় শিশুদের আরবি শেখাতে তৈরি করা হয় আরবি শিক্ষা কেন্দ্র। বর্তমানে জায়গাটি দুই অজ্ঞাত ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রী মোশাররফ হোসেনের নির্দেশে তাদেরকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী। এর পর থেকে বরাদ্দপ্রাপ্তরা জায়গাটি নিজেদের আয়ত্বে নেয়ার জন্য মসজিদ ভাঙার তৎপরতা চালাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এদিকে মসজিদ ও আরবি শিক্ষা কেন্দ্র রক্ষার দাবিতে প্রতিদিন প্রতিবাদ সমাবেশ করছে এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার সকালেও মসজিদের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় এলাকবাসী সরকারি পরিত্যক্ত সম্পত্তিতে পরিচালিত ‘মসজিদ ও আরবি শিক্ষা কেন্দ্র রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মুক্তিযোদ্ধা সফর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধা হাসান মনসুর বলেন, স্বাধীনতার পরে সরকারি এই পরিত্যক্ত জায়গাটিতে জামে মসজিদ গড়ে তোলেন এলাকাবাসী। সম্প্রতি মসজিদের জায়গাটি দুইজন মুক্তিযোদ্ধার নামে বরাদ্দ দিয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রাণালয়। মসজিদ উচ্ছেদ করে মুসল্লিদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার এরকম অর্বাচীন সিদ্ধান্ত এলাকাবাসীকে হতবাক করেছে। ২৫ বছর আগ থেকে এ মসজিদ স্থায়ীভাবে চালু রয়েছে। স্থায়ী একটি মসজিদকে যাচাই বাচাই না করে ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রেখে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোশেনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন, মসজিদ কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইউনুস, শহীদ মীর্জা লেন আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সভাপতি জয়নাল আবেদিন, আবু বকর সিদ্দিকি, হাসান তারেক, শাহাজাদা মো. আরমান, শেখ মো. বাহার প্রমুখ।

ঘটনাস্থলে যাওয়া চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার থানার এসআই সালেহ আহমেদ  জানান, মসজিদটি প্রায় ২০ বছর আগে নির্মিত হয়েছে। এলাকার মানুষজন মসজিদটিতে নিয়মিত নামাজ পড়েন। কিছু দিন আগে দুই জন মুক্তিযোদ্ধা, একজনের নাম এমদাদ হোসেন দাবি করেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদেরকে এ জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। মসজিদের একটি অংশ আজ উচ্ছেদ করতে গেলে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে। পরে স্থানীয় কাউন্সিলরসহ সবাইকে নিয়ে বসে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়। পুরো মসজিদ নয়, মসজিদের একটি অংশ জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উচ্ছেদে যাওয়া হয়।

এ ব্যাপারে গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের বক্তব্য জানতে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।