চকবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, ২৩ জনের মরদেহ উদ্ধার
আগুন প্রায় ৫ ঘণ্টা চেষ্টার পর রাত ৩টায় নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে ফায়ার সার্ভিস। তবে আগুন পুরোপুরি নেভাতে আরও সময় লাগবে বলে ফায়ার সার্ভিসের তরফ থেকে বলা হয়েছে। রাজ্জাক ভবনের সামনের সড়কে বেশ কয়েকটি মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা বলছেন সেখানে পাঁচজনের লাশ রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণের এক ঘণ্টা পর সেখান থেকে ২৩টি লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। তবে উদ্ধারকাজ পুরোপুরি শেষ হওয়ার পর নিহতের সঠিক তথ্য জানা যাবে বলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ।
ইতিমধ্যে ওই এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের একটি অস্থায়ী কমান্ডপোস্ট বসিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
এর আগে রাজধানীর চকবাজার এলাকায় আবাসিক ভবনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। বুধবার দিবাগত রাত ১০টা ১০ মিনিটে নন্দকুমার দত্ত সড়কের চুরিহাট্টা রাজ্জাক ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে। রাত ৩টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। সরু গলি হওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে পারেনি। চকবাজার থানার সামনে গাড়ি রেখে সেখান থেকেই পাইপের মাধ্যমে পানি নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ ছাড়া আশপাশের ভবনের পানির ট্যাংক থেকেও পানি সংগ্রহ করে ফায়ার সার্ভিস।
আগুন লাগার পর রাত ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত পাশের প্রায় চারটি ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। চকবাজার এলাকার গ্যাসলাইন থেকেও ওই সময় আগুন বের হচ্ছিল। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল।
ঘটনাস্থল থেকে থেমে থেমে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গিয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন জানান, রাজ্জাক ভবনের নিচতলায় রাসায়নিক দ্রব্যের কারখানা ছিল এবং ওই ভবনের পাশে বেশ কিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। যেগুলোর প্রতিটিতে চার থেকে পাঁচটি করে গ্যাসের সিলিন্ডার রয়েছে। আগুন ছড়িয়ে যাওয়ার কারণে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হতে পারে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১০ জন ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ও ৪০ জন জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য এসছেন। আহত ও আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীরা এখনো ঢাকা মেডিকেলে আসছেন। বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীনদের মধ্যে রেজাউল ও সোহাগ মারাত্মকভাবে পুড়ে গেছেন। রেজাউলের শরীরের ৬০ শতাংশ ও সোহাগের ৫১ শতাংশ পুড়ে গেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার, মাহমুদ, জাকির (১), সেলিম, রেজাউল, জাকির (২), হেলাল ও মোজাফফরের নাম জানা গেছে।