গত বছর ভারতে বায়ুদূষণে ১৬ লক্ষ লোকের প্রাণহানি

গত বছর ভারতে বায়ুদূষণে ১৬ লক্ষ লোকের প্রাণহানি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনার প্রকোপে যখন শঙ্কিত গোটা ভারত, তখনই সামনে এল আতঙ্কের নতুন তথ্য। এই আতঙ্কের নাম- বায়ুদূষণ। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে, ২০১৯-এ দেশে হওয়া মৃত্যুর বড় অংশের জন্য দায়ী এই দূষণই! অর্থাৎ, ওই এক বছরে ভারতে এমন ১৬ লক্ষ মৃত্যু হয়েছে, যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে বায়ুদূষণের সঙ্গে যুক্ত।

‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার’ সমীক্ষার এ বছরের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই মৃত্যুর জন্য দায়ী ঘরের এবং বাইরের- দুই পরিবেশের বায়ুদূষণই। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১০ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে দেশের বাতাসে বিষ আরও বেড়েছে। ২০১৯-এ ঘরোয়া বায়ুদূষণে কিঞ্চিৎ লাগাম টানা সম্ভব হলেও বাইরের অবস্থা সেই একই। এই নিরিখে বিশ্বের অন্য দেশের তুলনায় ভারতের মতো দক্ষিণ এশিয় দেশগুলো অনেকটাই পিছিয়ে।

লাগামছাড়া বায়ুদূষণ যে লোকজনের জীবনের মেয়াদ কমিয়ে দিচ্ছে, সে সতর্কবাণী অনেক আগে থেকেই দিচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। এই সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, এই ১৬ লক্ষ লোকের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে সিওপিডির কারণে। বাকিদের ফুসফুস সংক্রান্ত অন্য রোগ কিংবা হার্টের অসুখের কারণে। প্রতিটির সঙ্গেই বায়ুদূষণের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে সমীক্ষকরা।

বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের আরও বড় কারণ হল, সদ্যোজাতদের উপর এই ধরনের দূষণের প্রভাব। সমীক্ষার রিপোর্ট বলছে, শুধুমাত্র এই কারণেই গত বছর কম করে ১ লক্ষ ১৬ হাজার নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে! অর্থাৎ, ২০১৯-এ দেশে হওয়া মোট সদ্যোজাতের মৃত্যুর প্রায় ২১ শতাংশ। শিশুমৃত্যুর অর্ধেকের ক্ষেত্রেই বাড়ির বাইরের দূষিত বায়ু দায়ী। এই দূষণের জন্য সমীক্ষকরা মূলত দায়ী করেছে চারকোল, কাঠ এবং ঘুঁটের মতো জ্বালানিকে।

সমীক্ষকরা আরও বলছে, দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মোটের উপর স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, সময়ের আগে প্রসব কিংবা সদ্যোজাতের ওজন কম হওয়ার মতো সমস্যার পিছনে বায়ুদূষণের একটা ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে। গর্ভবতী অবস্থায় মা দীর্ঘ সময় এই দূষণের সংস্পর্শে এলে সন্তানের উপর প্রভাব পড়তে বাধ্য।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলোর মধ্যে বায়ুদূষণই সব থেকে উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে এই সমীক্ষায়। হেলথ এফেক্টস ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত এই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, পিএম ২.৫ দূষণের ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম দশেই রয়েছে ভারত।