খোদায়ী রহমতের পথগুলো খোলা রাখা রাষ্ট্র ও নাগরিকের সাংবিধানিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

খোদায়ী রহমতের পথগুলো খোলা রাখা তথা মসজিদ, জুমুয়া, গণজমায়েতে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ এবং তওবা ও দোয়া করা গযবী করোনা ভাইরাস ব্যবস্থাপনায় রাষ্ট্র ও নাগরিকের সাংবিধানিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।

মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ইতিহাস এই বলে যে, তারা ততবারই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করছে যতবার তারা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী আইন পাশ হবেনা-এ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সঙ্গতকারণেই করোনা ভাইরাস নিয়ে সরকার পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী পদক্ষেপে যেতে পারেনা।
এখানে উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাস মূলতঃ কাফিরদের জন্য এক মহাগযব। একটি উদাহারণ হলো- চীন সরকার যখন উইঘুর মুসলিমদের উপর অমানুষিক অবর্ণনীয় অত্যাচার নির্যাতন করে মসজিদগুলো বন্ধ করে দেয়, এমনকি পবিত্র কুরআন শরীফ পরিবর্তনের কথা বলে তখনই চীনে প্রথম করোনা ভাইরাসের ব্যাপকতা ছড়ায় ও গণহারে মৃত্যু শুরু হয়। এরপর চীন সরকার কর্তৃক মসজিদ খুলে দেয়া, মুসলিমদের প্রতি নমনীয় হওয়া পৃথিবীবাসী লক্ষ্য করেছে।

পাশাপাশি ইরানের শিয়ারা যেহেতু আমাদের মুসলমান মনে করেনা অর্থাৎ তারা নিজেরাই মুসলিম নয় তাই তাদের দেশেই করোনা বিস্তার লাভ করেছে।

করোনা ভাইরাস পর্যবেক্ষণে দেশবাসী মুসলমান ও সরকারকে যা করতে হবে তা হলো-

প্রথমতঃ মনে রাখতে হবে- ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু আছে বলে বিশ্বাস করা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার খিলাফ। কারণ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ বলে কিছু নেই।
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “কোনো রোগই সংক্রামক নয়। পেঁচার মধ্যে কুলক্ষণের কিছুই নেই এবং পবিত্র ছফর শরীফ মাসে কোনো অশুভ নেই। তখন একজন হযরত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাহলে আমার উটের এ অবস্থা হলো কেন? যে উটগুলো হরিণের মতো তরুতাজা ছিল, যেগুলো ময়দানে স্বাধীনভাবে বিচরণ করত। এমতাবস্থায় কোথা থেকে এক চর্মরোগাক্রান্ত উট এসে সে উটের পালে মিলিত হলো এবং উটগুলোকে চর্মরোগে আক্রান্ত করে দিলো। ফলে এ উটগুলোও খুজলিযুক্ত হলো। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আচ্ছা তাহলে প্রথম উটটির চর্মরোগ কিভাবে হলো? অর্থাৎ প্রথমটি যেভাবে খুজলিযুক্ত হয়েছিলো ঠিক পরবর্তী উটগুলোও সেভাবেই খুজলিযুক্ত হয়েছে।”

করোনা ভাইরাস নিয়ে অনেকেই নানা ধরণের তথ্য প্রচার করছে। যা নিয়ে অনেকেই অহেতুক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমানদের কি করণীয় হলো, বেশি বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা এবং নিয়মিত সুন্নতী খাদ্যসমূহ গ্রহণ করা। কেননা, পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠকারীর প্রতি এবং যে স্থানে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা হয়, সেখানে মহান আল্লাহপাক উনার খাছ রহমত মুবারক নাযিল হয়ে থাকে। আর যেখানে মহান আল্লাহপাক উনার রহমত মুবারক নাযিল হয় সেখানে কোন ধরণের আযাব-গযব আসতে পারে না। তাই সকল মুসলমানদের উচিত, বেশি বেশি পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা। তাছাড়া নিয়মিত সুন্নতী খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করারও প্রয়োজন। কারণ সুন্নতী খাদ্যসমূহে আছে বেমেছাল রহমত ও বরকত, যা শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার থেকে জানা যায়, সিরকা, কালোজিরা, মধু, ত্বীন, যয়তুন, খেজুর ইত্যাদি সুন্নতী খাদ্যসমূহ বিভিন্ন ধরণের অসুখ-বিসুখ, রোগ-বালাইকে প্রতিরোধ করে, ধ্বংস করে দেয়।

পাশাপাশি উল্লেখ্য, মসজিদ, আযান, জামায়াত ইত্যাদি মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত লাভের উৎস ও উছীলা। মসজিদ মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ও পবিত্র ঘর। যেখানে অনবরত মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত নাযিল হয়। তাই যারা মসজিদে যাবেন উনারা রহমত লাভ করবেন। আর যারা রহমত লাভ করবেন উনারা সমস্ত গযব থেকে মুক্তি লাভ করবেন। সুবহানাল্লাহ! আর পবিত্র আযান, পবিত্র জামায়াত তো মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র যিকির, পবিত্র নামায ও পবিত্র মসজিদে যাওয়ারই আহবান। সুবহানাল্লাহ! তাই পবিত্র আযান পরিবর্তন করা ও পবিত্র জামায়াত নিষিদ্ধ করার অর্থ হচ্ছে পবিত্র মসজিদে যেতে নিষেধ করা। যা সম্পূর্ণ কুফরী এবং কাফির ও জাহান্নামী হওয়ার কারণ।

প্রসঙ্গত সরকারের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা জামাতীরা সরকারকে বিতর্কিত করার জন্য জুমুয়া শরীফ, মসজিদ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এটা কোনক্রমেই বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগের কাছে কাঙ্খিত নয়।
উল্লেখ্য, এদেশে জামাত-জোট কেউই তাদের পোষ্টারের প্রতি ‘মহান আল্লাহ পাক সর্বশক্তিমান’ এই কথা প্রচার করেনা। কিন্তু সব নির্বাচনের সব আসনে এমনকি এবারেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও তার নির্বাচনী পোষ্টারের সবার উপরে ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বশক্তিমান’ ছাপিয়ে অর্থাৎ সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস প্রচার করেই জনগণের ম্যান্ডেট নিয়েছেন।
কাজেই সরকার পরিচালনায় তথা করোনা ব্যবস্থাপনা সরকারকে সর্বাগ্রে সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস প্রতিফলিত করতে হবে। করোনা ভাইরাস ছোঁয়াছে নয়। পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার এই বিশ্বাসের ভিত্তিতে জনমত তৈরী করতে হবে। করোনা ভাইরাস কাফির-মুশরিকদের প্রতি আযাব এই উপলব্ধি জাগরুক করতে হবে। এবং এ গযব থেকে বাঁচতে রহমত মুবারক হাছিল করতে হবে, তথা রহমত প্রাপ্তির দরজা খোলা রাখতে হবে। এ দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ সরকারসহ প্রতিটি নাগরিককে গভীরভাবে অনুধাবন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। ইনশাআল্লাহ!

প্রসঙ্গতঃ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে উল্লিখিত রয়েছে- ২(খ) প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রদ্বীন হলো পবিত্র দ্বীন ইসলাম। কাজেই পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার আলোকেই রাষ্ট্রকে করোনা ভাইরাসের ব্যবস্থাপনা করতে হবে।

উল্লেখ্য, অতীতেও বহু নজীর রয়েছে যে, বিশেষ বিপর্যয়ে সরকারের নির্দেশে ও পৃষ্ঠপোষকতায় দেশের মুসলমানগণ গণজমায়েত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে তওবা ও দোয়া করেছেন। এবং তার সুফলও মিলেছে। একইভাবে করোনা ভাইরাসের ব্যবস্থাপনায় সরকারকে সব মসজিদ ও জুমুয়া খোলা রেখে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পবিত্র মীলাদ শরীফ ও দোয়ার মাহফিলের ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যক্তিগত ও সরকারী পর্যায়ে তওবা করে সম্মানিত ইসলামী আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। ইনশাআল্লাহ! এটাই ক্ষমতাসীন সরকারের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন এবং সাংবিধানিক দায়িত্ব বাস্তবায়ন।

-আল্লামা মুহম্মদ মাহবুব আলম