খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ

খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বের শীর্ষ তালিকায় বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক : বর্তমানে বাংলাদেশ হেক্টরপ্রতি ধানের ফলনে তৃতীয়। চীন ও ভিয়েতনামের পর বাংলাদেশের অবস্থান। এখানেই থেমে যাননি বাংলার কৃষকরা। একই জমিতে একাধিক ফসল চাষের দিক থেকেও বাংলাদেশ এখন বিশ্বের জন্য পথিকৃত। বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে সবচেয়ে প্রভাবশালী গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রকাশিত বিশ্বের ক্ষধা সূচকের প্রতিবেদন অনুযায়ী এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভাল অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

বছরে প্রায় ৩ কোটি টন (শিশু ও বৃদ্ধ ছাড়া কোটি ৮০ লাখ টন) চাহিদার বিপরিতে উৎপাদন হচ্ছে প্রায় ৩ কোটি ৫০ লাখ টন (২০১৭-১৮)। তবে ইদানীং মানুষের খাদ্যাভাস পরিবর্তনের কারণে দিন দিন বাড়ছে গমের চাহিদা। বর্তমানে বাংলাদেশে ৪৫ থেকে ৫০ মেটিক টন গমের চাহিদা থাকলেও উৎপাদন হচ্ছে মাত্র ১৩ থেকে ১৪ লাখ মেট্রিক টন, আর ভৃট্টা উৎপাদন হচ্ছে ৩৫ লাখ টন। এসব কথা তুলে ধরে উপ-পরিচালক (কৃষি সম্প্রসারণ : গ্রামীণ অর্থনীতি), জাতীয় প্রশিক্ষণ একাডেমি (নাটা) কৃষি গবেষক ও পুষ্টিবিদ ড. মো. দেলোয়ার হোসেন মজুমদার আরো জানান, স্বাধীনতার ঠিক পরে ১৯৭২ সালে খাদ্য শস্য উৎপাদন হয়েছিল এক কোটি ১০ লাখ মেট্রিক টন। সাড়ে ৭ কোটি মানুষের জন্য ওই খাদ্য পর্যাপ্ত ছিল না। এর পরের ৪৪ বছরে এখানে মানুষ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে হয়েছে ১৬ কোটি, আর আবাদী জমি কমেছে ২০ থেকে ৩০ ভাগ।

দেশে এখন খাদ্যশস্য উৎপাদন হচ্ছে তিনগুণ বেশি, ভূট্টাসহ এর পরিমাণ প্রায় চার কোটি মেট্রিক টন। এভাবেই প্রধান খাদ্যশস্য উৎপাদন বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ।

এতো সাফল্যের পরেও আপদকালীন মজুদ, জরুরী অবস্থা মোকাবেলার জন্য সরকারকে প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টন খাদ্যশস্য (বিশেষ করে গম) বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। এদিকে জৈবজ্বালানী ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে বিশ্বে খাদ্যশস্য উৎপাদনের সুযোগ দিন দিন কমে যাচ্ছে। বাস্তব এই পরিস্থিতিতে বর্ধিত জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

পৃথিবীর একটি জনবহুল দেশ বাংলাদেশ। দেশটির অধিকাংশ এলাকা সমতল বিধায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে লোকসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে এই জনপদে প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১১৬৪ জন মানুষ বসবাস করছেন। প্রতিদিন প্রায় ৭০০০ নতুন মুখের জন্ম হচ্ছে। অন্যদিকে প্রতিদিন ১৮৮ হেক্টর হিসেবে বছরে প্রায় ৬৮৭৬০ হেক্টর জমি চাষের আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে। আর খাদ্য শস্যের চাহিদা বাড়ছে বছরে ৪.৫ লাখ টন হারে।
পৃথিবীতে প্রায় ২০৬টি দেশের মধ্যে ৩৯টি দেশ ধান উৎপাদন করে। বাকী দেশগুলো গম, ভুট্টা, যব, বার্লি ইত্যাদি দানাদার খাদ্যশস্য উৎপাদনে করে থাকে। বিশ্বের প্রথম সারির ১০টি ধান উৎপাদনকারী দেশের মধ্যে আয়তন ও উৎপাদনের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ।