খাওয়াতে না পেরে বিক্রি করছেন গরু

নওগাঁ সংবাদদাতা: গো-খাদ্যের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নওগাঁর খামারি ও কৃষকরা। ফলে জেলার হাজার হাজার খামারি তাদের গবাদিপশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। পর্যাপ্ত খাবারের যোগান দিতে না পেরে কেউ কেউ আবার গবাদিপশুই বিক্রি করে ফেলছেন।

খামারিরা বলছেন- পশুখাদ্যের দাম বাড়লেও বাড়ছে না দুধের দাম। খাবারের সঙ্গে দুধের দামের সামঞ্জস্য না থাকায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। পশুদের পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। গো-খাদ্যের দাম বেড়ে গেলেও সরকার কমানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা।
খামারি ও কৃষকরা বলছেন, সংসারে সচ্ছলতা আনতে ও পরিবারের দুধের চাহিদা মেটাতে গবাদিপশু লালনপালন করেন তারা। খড় ও ঘাসের পাশাপাশি দানাদার খাবার হিসেবে ভুসি, খৈল, আটা ও ফিড দেওয়া হয়। গত ২০ দিনের ব্যবধানে প্রকারভেদে গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০-২০ টাকা। দফায় দফায় দাম বেড়েই চলেছে। খাবার জোগান দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। খাবারের দাম বাড়ায় দুধ উৎপাদন ও গরু মোটাতাজাকরণ ব্যাহত হচ্ছে। এভাবে পশুখাদ্যের দাম বাড়তে থাকলে খামার বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া তাদের কোনো উপায় থাকবে না।

বদলগাছী উপজেলার চাকরাইল গ্রামের দুগ্ধ খামারি রুস্তম আলী। তিনি বলেন, আমার খামার থেকে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ২৫ লিটার দুধ পাওয়া যায়। এ পরিমাণ দুধের দাম পাওয়া যায় ১ হাজার ২০০ টাকা। বাড়ির খড় ও ঘাস ছাড়াও এতগুলো গরুর পেছনে দানাদার খাবারের খরচ পড়ে প্রায় ১ হাজার ৮০০ টাকার মতো। গত একমাস থেকে দানাদার খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের মতো খামারিদের জন্য পশুপালন কষ্টকর হয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, গো-খাদ্যের দাম বাড়লেও বাড়েনি দুধের দাম। এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে।

একই গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন বলেন, আমরা কৃষক মানুষ। সংসারের উন্নয়নে গরু-ছাগল পালন করে থাকি। বাড়িতে পাঁচটি গরু আছে। বাড়ির খড় খাওয়ানোর পাশাপাশি স্বাস্থ্যবান রাখতে দানাদার কিছু খাবার দিয়ে থাকি। যেভাবে খাবারের দাম বাড়ছে এতে করে কেনা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই যে পরিমাণ দানাদার খাবার দেওয়া দরকার তুলনামূলক কম করে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের উচিত খামারি ও কৃষকদের বাঁচাতে পশুখাদ্যের দাম কমানো হোক।