কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হলো নিউ জিল্যান্ডের সংসদ অধিবেশন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে ভয়াবহ খ্রীষ্টান জঙ্গী হামলার পর হতাহতদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ও দেশটিতে বসবাসরত মুসলিমদের প্রতি সম্মান জানিয়ে কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশন শুরু করেছে নিউজিল্যান্ডে। ওই হামলার পর মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দেশটির পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনের শুরুতেই পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত করা হয়।

২০১৯ সালের ১৫ মার্চ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, নিউ জিল্যান্ডের দুই মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ মুসল্লিকে হত্যা করে উগ্র মুসলিমবিদ্বেষী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। এর আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে হামলাকারী। এতে নিউ জিল্যান্ডের ইতিহাসের এই নৃশংস খুনি দাবি করে, শ্বেতাঙ্গরা গণহত্যার শিকার এবং সে যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে দিতে চায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ‘শ্বেতাঙ্গ পরিচয়ের নতুন প্রতীক’ হিসেবে আখ্যায়িত করে মুসলমানদের জন্য একটি ভীতিকর পরিবেশ তৈরিরও আহ্বান জানায় হামলাকারী।

বিশেষ পার্লামেন্ট অধিবেশনে ভাষণ দিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এদিন মুসলিম রীতিতে সালাম দিয়ে ভাষণ শুরু করেন তিনি। মসজিদে হামলায় হতাহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাতে গিয়ে পার্লামেন্টের স্পিকারকে সম্বোধন করে জাসিন্ডা বলেন, মিস্টার স্পিকার, আস সালামু আলাইকুম। পরে ইংরেজিতে বলেন, পিস বি আপন উইথ ইউ (আপনার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)।

পার্লামেন্টের ওই অধিবেশনে তিনি হতাহতদের পরিবারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেছেন। একই সঙ্গে হামলাকারীকে প্রতিহত করতে গিয়ে প্রাণ হারানো সাহসী নাইম রশিদের আত্মত্যাগের কথাও স্মরণ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হামলাকারী অনেক কিছু করতে চেয়েছিল; কিন্তু কুখ্যাতি ছাড়া সে কিছুই পায়নি। যে কারণে আপনি আমার মুখে কখনই তার নাম শুনতে পাবেন না।

নিউ জিল্যান্ডবাসীও এই মর্মান্তিক ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শ্রদ্ধা জানিয়ে যাচ্ছেন। ফুল দেওয়ার স্থানগুলো ভরে গেছে। ফুলের সঙ্গে রয়েছে সমবেদনা জানিয়ে লেখা চিরকুটও।

শুক্রবারের ওই হামলায় বাংলাদেশ, ভারত, তুরস্ক, কুয়েত, সোমালিয়া এবং অন্যান্য দেশের নাগরিকরা নিহত হয়েছে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কমপক্ষে ৪৯ জন। এদের মধ্যে ১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।