কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঋণ বিতরণে যুক্ত হলো আরো ৩ ব্যাংক

আর্থিকখাতে সহায়তা প্রকল্পের (এফএসএসপি) তহবিল থেকে ঋণ বিতরণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আরও তিনটি বাণিজ্যিক ব্যাংক যুক্ত হলো। রোববার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যমুনা ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক এবং শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক চুক্তি করেছে।

এর মধ্য দিয়ে মোট ১৯টি বাণিজ্যিক ব্যাংক এ তহবিল থেকে ঋণ বিতরণে চুক্তিবদ্ধ হলো। উৎপাদনশীলখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে ৩৫ কোটি ডলারের দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন তহবিল ব্যবহারের জন্য চতুর্থ দফায় এ চুক্তি করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এসকে সুর চৌধুরীর উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে ঋণ প্রকল্পটির পরিচালক ও ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহসান উল্লাহ এবং ব্যাংকগুলোর পক্ষে তাদের ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা চুক্তিতে সই করেন। এসময় যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল আলম, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এমএ হালিম চৌধুরী এবং শাহজালাল ব্যাংকের এমডি ফরমান আর চৌধুরী নিজ নিজ ব্যাংকের পক্ষে চুক্তি সই করেন।

বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় ‘ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্ট’ (এফএসএসপি) এর আওতায় একটি বিশেষ তহবিল গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে চুক্তিবদ্ধ ব্যাংকগুলোকে দীর্ঘমেয়াদে অর্থাৎ ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদী বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ সহায়তা দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ তহবিল ব্যবহারের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের বৈদেশিক মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদী ঋণ চাহিদা পূরণ করতে পারবে। এতে করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে নেয়া বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ কমে আসবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো বাণিজ্যিক ঋণের দীর্ঘমেয়াদী ঋণ পরিশোধের সময় পাবে।

এর আগে গত ১৯ নভেম্বর প্রথম দফায় চারটি ব্যাংকের (মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক) সঙ্গে এ নিয়ে চুক্তি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর ১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ছয়টি ব্যাংক যথাক্রমে ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয় এবং তৃতীয় দফা চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো- ডাচ বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

এ তহবিল দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর সুশাসনের দিকেও লক্ষ্য রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেবল একটি নির্দিষ্ট মান অর্জনের পরই ব্যাংকগুলো এ তহবিলে অংশগ্রহণ করতে পারবে। সুদের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলোর ক্যামেলস রেটিং প্রযোজ্য হবে। ক্যামেলস সূচকের ভিত্তিতে ব্যাংকগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। এর প্রথম ক্যাটাগরিতে অর্থাৎ যে ব্যাংকের সার্বিক দক্ষতা যাদের ভালো তাদের ক্ষেত্রে সুদ হার হবে যথাক্রমে ৫ বছরের ঋণের জন্য ৩ শতাংশ হারে, ৭ বছরের জন্য ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে এবং ১০ বছরের জন্য ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হারে।

একইভাবে দ্বিতীয় ক্যাটাগরির ব্যাংকগুলোকে যথাক্রমে ৫ বছরের ঋণের জন্য ৩ দশমিক ২৫ শতাংশ হারে, ৭ বছরের জন্য ৩ দশমিক ৫ শতাংশ হারে এবং ১০ বছরের জন্য ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সুদ দিতে হবে।

তৃতীয় ক্যাটাগরির ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ সুদহার হবে যথাক্রমে ৫ বছরের ঋণের জন্য ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, ৭ বছরের জন্য ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ এবং ১০ বছরের জন্য ৪ শতাংশ। অর্থাৎ ক্যামেলস রেটিং এ এক ধাপ ওপরে উঠতে পারলে ব্যাংগুলোর দশমিক ২৫ শতাংশ হারে স্প্রেড কমে যাবে।