কৃষকদের জন্য চালু হচ্ছে ‘শস্য বীমা’

নিজস্ব প্রতিবেদক: কৃষকদের জন্য নতুন আশার আলো নিয়ে নতুন বছর শুরু হবে। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময় থেকে কৃষকদের জন্য ‘শস্য বীমা’ চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দেশে জীবন বীমা, সাধারণ বীমা, অগ্নিবীমাসহ বিভিন্ন ধরনের বীমা চালু রয়েছে।

অথচ দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে শস্য বীমা নেই। তাই প্রথমে হাওর এলাকায় এ বীমা চালুর মাধ্যমে এর যাত্রা শুরু হবে। পরবর্তীতে পুরো দেশের কৃষকরা এর আওতায় আসবে।

প্রতি বছর বাংলাদেশে কোন কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগে থাকে। এ সময় প্রচুর ফসলহানী হয়। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শস্য বীমা চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে উঠেনি। সর্বশেষ চলতি বছর এ বীমা চালু হওয়ার কথা থাকলেও সেটা হয়ে উঠেনি। তবে নতুন বছরের শুরুতেই শস্য বীমা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর থেকে দেশে ‘শস্য বীমা’ চালু করার কথা থাকলেও তা সম্ভব হচ্ছে না। এখন আগামী বছরে এই বীমা চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার জন্য এই বীমার আওতায় তাদের নিয়ে আসা হবে। প্রাথমিকভাবে হাওরবেষ্টিত সাত জেলায় পাইলট প্রকল্প হিসেবে শস্য বীমা চালু করা হবে। পর্যায়ক্রমে পুরো দেশের কৃষকদের এর আওতায় আনা হবে। শস্য বীমার প্রিমিয়ামের অর্ধেক সরকার ভর্তুকি হিসেবে দেবে, বাকি অর্ধেকটা কৃষকদের কাছ থেকে নেয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যেই প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করেছে।

জানা গেছে চলতি বছরই শস্য বীমা চালু হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মতানৈক্যের কারণে তা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে সে মতভেদ আর নেই। প্রক্রিয়ার বিষয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মতি রয়েছে। ফলে আশা করা যায় আগামী বছরের মাঝামাঝিতে পরীক্ষামূলকভাবে হলেও দেশে শস্য বীমা চালু করা সম্ভব হবে।

সূত্র জানায়, এর আগে এ বছরের আগস্ট মাসে শস্য বীমার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে একটি ধারণাপত্র জমা দেয় সাধারণ বীমা করপোরেশন। ধারণাপত্রে ২০০৪, ২০১০, ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির বিভিন্ন বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে বোরো ধান তোলার ১৫-২০ দিন আগে আকস্মিক বন্যায় এসব এলাকার সম্পূর্ণ ফসল তলিয়ে যায়। ২০১৭ সালের বন্যায় হাওর এলাকার সাতটি জেলার মোট উৎপাদিত ৫২.৫ লাখ টন ফসলে ক্ষতি হয় ৩৪৮ কোটি ৬ লাখ টাকা।