কলড্রপ বিরক্তি বাড়িয়েছে

কলড্রপ বিরক্তি বাড়িয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক : টেলিকম নেটওয়ার্কের মানোন্নয়ন ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রতিযোগিতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে সিপিবির সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স সংগঠনের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বলেন, কলড্রপ ও ইন্টারনেটের ধীরগতি গ্রাহকদের বিরক্তি বাড়িয়ে তুলেছে। গ্রাহকরা হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করলেও তার কাঙ্খিত সেবা না পাওয়ায় গ্রাহক অসন্তোষ বেড়েছে শতভাগ। নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নের জন্য কোনো পদক্ষেপই এ পর্যন্ত লক্ষ্য করা যায়নি।

সবকিছুই চলে কিন্তু চলে না শুধু শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষাখাত আজ ধনীদের দখলে। উচ্চমূল্যের ডেটা ও উচ্চমূল্যের ডিভাইস দরিদ্র জনগোষ্ঠীরা কিনতে পারছে না। কিন্তু সরকার এ বিষয়ে আন্তরিক হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আজ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির ভুলনীতি ও মূলনীতি না মানা এবং কমিশন বাণিজ্যের কারণে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করার চক্রান্ত চলছে। টেলিটককে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় না এনে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ তরঙ্গকে কুক্ষিগত করে রেখে নেটওয়ার্ক ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলার সকল ব্যবস্থাই করা হয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ৯০ দশকের পর ২-জি টেলিকম সেবার দ্বার উন্মুক্ত হওয়ার পর এ সেবার গ্রাহক সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রযুক্তির পরিবর্তন ও চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ সেবার উপর মানুষ নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। ২০১৩ সালে ৩-জি প্রযুক্তির ইন্টারনেট ও ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারিতে দ্রুতগতির ৪-জি ইন্টারনেট সেবা চালু করা হয়।

বর্তমানে সক্রিয় সিম রয়েছে ১৬ কোটি ৩৪ লাখ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ২১ লাখ ১৩ হাজার। ৩-জি ব্যবহারকারী ৬১.৬৬৩ মিলিয়ন। ৪-জি ব্যবহারকারী প্রায় ১৯.৩১ মিলিয়ন। ডেটার ব্যবহার ১০ জিবিপিস থেকে বেড়ে ১২০০ জিবিপিএসে দাঁড়িয়েছে।

অথচ সেবার মান কমেছে প্রায় ৪৫ শতাংশ। ইন্টারনেটের গতি কমে দাঁড়িয়েছে ২ থেকে ৩ এমবিপিএস। অথচ চাহিদা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ এমবিপিএস গতির।

এর কারণ জানতে গত ২৫ জুলাই ২০২০ এ নিয়ন্ত্রক কমিশন, অপারেটরদের শীর্ষ কর্তাব্যক্তি, বিশেষজ্ঞরা, সাংবাদিকদের নিয়ে আলোচনায় একটি বিষয় সকলেই স্বীকার করেছেন স্বল্প তরঙ্গ ব্যবহারের কারণেই নেটওয়ার্কের মান এত খারাপ হয়েছে। অপারেটরদের দাবি ৩-জি বিনিয়োগের অর্থ ওঠার আগে ৪-জিতে বিনিয়োগ তাদেরকে চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে। এছাড়া ১ হাজার কোটি টাকা ১ মেগাহার্জ তরঙ্গ কিনে বিনিয়োগ করার সামর্থ্য একটি অপারেটরের থাকলেও অন্য অপারেটরদের নেই।

তিনি জানান, এই সংকট নিরসনে গত ১৮ আগস্ট আমরা একটি সংবাদ সম্মেলন করি এবং ২০ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীকে পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি স্মারকলিপি দিয়ে দ্রুত সংকট নিরসনের দাবি জানাই। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ সরকার নিয়েছে বলে আমরা লক্ষ্য করিনি।

একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে হ্যান্ডসেটসহ ফ্রি ইন্টারনেট দিতে অনুরোধ করেছিলাম। গত সপ্তাহ থেকে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান টেলিটক ১০০ টাকায় সারা মাস ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এটি ভালো খবর হলেও টেলিটকের নেটওয়ার্ক সারাদেশে বিস্তৃত না থাকা ও মানসম্মত না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা এর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।