‘ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই’

নিউজ ডেস্ক: বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে স্মরণ করে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার আলোচিত মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, এ এলাকায় তিনি (মওদুদ আহমদ) উন্নয়নের শুভসূচনা করেন। এটি অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। আমার সঙ্গে তার রাজনীতির মতবিরোধ ছিল। এটি আজীবন থাকবে। কিন্তু তিনি এখন মারা গেছেন। তার সাথে এখন কিসের রাজনীতি?

তিনি বলেন, যে দেশে গুণীর সম্মান দেয়া হয় না সেদেশে গুণী ব্যক্তির জন্ম হয় না। মুওদদ সাহেব ছিলেন একজন গুণী ব্যক্তি। তিনি ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু ১৯৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ড. কামাল হোসেনের সহকারী হিসেবে ওকালতি করেছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের পর সংবিধান প্রণয়নের সাথে জড়িত ছিলেন, তিনি একসময় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

তিনি বলেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান যদি পাকিস্তানের কারাগার থেকে ফিরে না আসতেন তাহলে ভারতের মিত্র বাহিনী বাংলাদেশ থেকে কখনো ভারতে ফিরে যেত না। তিনি এসব কথা তার লেখনীতে লিখে গেছেন।

তিনি বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে অবিস্মরণীয় নেতা। অথচ এ মানুষটি মারা গেছেন। আমাদের রাজনীতি এত সংকীর্ণ হয়ে গেছে যে আমি একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার নৈতিক দায়িত্বও পালন করতে পারছি না।

একটি স্বার্থান্বেষী মহল মনে করে আমি যদি এ কাজগুলো করি তাহলে আমার জনপ্রিয়তা বাড়বে। আমার অবস্থান সৃষ্টি হবে। সকল দলের মাঝে আমার সুনাম বয়ে আনবে। এজন্য ঈর্ষান্বিত হয়ে জাতীয় পর্যায় থেকে শুরু করে নোয়াখালীতে যারা অপরাজনীতির সাথে জড়িত তারা আজ এ শোকসভা করতে দেয়নি।

রোববার বিকেলে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডে সাথে এক সাক্ষাতকারে আবদুল কাদের মির্জা এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, তুমি গোলাপভরা ফুলদানি ভেঙে ফেলতে পার, কিন্তু বাতাস থেকে কখনো ফুলের গন্ধ মুছে ফেলতে পারবে না।

আজ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চলছে। আমার নামে নানা ধরনের ফেসবুক আইডি কে বা কারা খুলেছে আমি জানি না। এগুলো ফেক আইডি। আমার নামে একটি আইডি আছে। তাতে সবকিছু আছে। অথচ বলা হচ্ছে আমি নাকি ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে আমার ফেসবুক আইডি থেকে সব মুছে ফেলেছি। আমার সাথে ওবায়দুল কাদেরের কোনো যোগাযোগ নেই। ওনার (ওবায়দুল কাদের ) সম্পর্কে আমি কিছু বলব না।

উনি যদি আমার ভাই হন, তাহলে আমার রুমে কিভাবে পাঁচশ গুলি করা হয়? উনি যদি আমার ভাই হন তাহলে পৌরসভায় কিভাবে দুই হাজার গুলি করা হয়? আমাকে ছয় ছয়বার হত্যার চেষ্টা করা হয়? উনি থাকতে কিভাবে হয়? উনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। এগুলো কার প্ররোচনায় হচ্ছে? তার সাথে আমার যোগাযোগের প্রশ্নই আসে না।

আমার নামে ফেক আইডি খুলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এগুলো কার চক্রান্ত্র এ বিষয়ে আমি পরে বলব। দেশের মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য কারা এগুলো করছে আমরা সব বুঝি। আমরা যে বুঝি না এটা ঠিক না।

মির্জা কাদের বলেন, আমি ৪৭ বছর ধরে রাজনীতি করি। জেল-জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছি। উপবাস ছিলাম দলের জন্য। ঈদের দিন পর্যন্ত উপবাস ছিলাম। আজকে কষ্ট লাগে এসব কথা বলতে।

তিনি বলেন, আমার ছেলেগুলোর জামিন হয়নি। অথচ তাদেরগুলোর হয়েছে। আমি আমার কষ্টের কথাগুলো বলি, তাই আমার সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করা হয়েছে। আমার ছেলেগুলোর জামিন বন্ধ করা হয়েছে। আমার ছেলেগুলোর বাড়ি বাড়ি গিয়ে অস্ত্র দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে একের পর মামলা দিচ্ছে।

কাঞ্চনের বাড়িতে গিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে মামলা দিয়েছে আবার লিটনের বাড়িতে গিয়ে একই কায়দায় কাজ করার চেষ্টা করলে বাড়ির লোকজন যখন ভিডিও করেছিল তখন আর অস্ত্র দিয়ে কোনো কিছু করতে পারেনি। এভাবে উপজেলার প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে অস্ত্র দিয়ে মামলা দেয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পুলিশ এগুলো করছে। তারা দাঁড়িয়ে থেকে আমার পৌরসভায় গুলি করানো হয়েছিল এবং তাদের গুলিতে আলা উদ্দিন মারা গেছে।

তিনি বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, নোয়াখালীর ডিসি, এসপি, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসি ও ওসি তদন্ত যদি থাকে এখানে সাংবাদিক মুজাক্কির ও আলা উদ্দিনের পরিবার ন্যায়বিচার পাবে না। এমনকি এ এলাকার মানুষও ন্যায়বিচার পাবে না।

এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে ঢাকা থেকে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চান তিনি। এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের চৌকস অফিসার দিয়ে কোম্পানীগঞ্জের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, আপনারা খবর নেন, কিভাবে জেলে বসে বাদল লাইভ করে। সব চলছে একতরফা। একরামুল করিম চৌধুরী শনিবার দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে গিয়ে একটার সময় বের হয়ে এসেছে। আমি ভেতর থেকে খবর পেয়েছি আমাকে হত্যার নতুন ছক আঁকতেছে। এ বিষয়গুলো আপনাদের জানিয়ে রাখলাম। আমি কোনো কিছুতেই ভয় পাই না। আমি যে সত্যবচন শুরু করেছি তা আমি বলে যাব।