ওএমএসে চাল-আটার দাম কমছে, মার্চ থেকে কার্যকর

The price of rice has increased suddenly

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: সরকার খোলা বাজারে (ওএমএস) প্রতি কেজি চাল পাঁচ টাকা এবং আটা ২ টাকা কম দরে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে এখন ওএমএসে চাল প্রতিকেজি ১৫ টাকা এবং আটা ১৭ টাকা দরে বিক্রি হবে। মধ্য মার্চ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানা গেছে। বর্তমানে ওএমএসে প্রতি কেজি চাল ২০ টাকা এবং গম ১৯ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মজুদ করা চালও গমের সর্বশেষ অবস্থা এবং কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠার পরবর্তী অবস্থা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীর মৌখিক অনুমতির ভিত্তিতে মজুদ চাল ও গম কম দামে বিক্রির নির্দেশনা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মধ্য মার্চ থেকে দেশের প্রায় ৫০০ কেন্দ্র থেকে খোলা বাজারে হ্রাসকৃত দামে চাল ও আটা বিক্রি শুরু হবে। মন্ত্রণালয় আশা করছে নতুন ফসল ওঠার আগে তারা খাদ্য গুদামগুলোতে মজুদ থাকা প্রায় অর্ধেক খাদ্য বিক্রি করতে সক্ষম হবে।

সরকার ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওএমএস-এর মাধ্যমে মোট ১ লাখ ২১ হাজার ৩৯ টন চাল ও গম বিক্রি করেছে। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে বিক্রি করেছিল ২ লাখ ২৬ হাজার ৬০৮ টন। অর্থাৎ ওএমএস থেকে চাল, গম কেনার আগ্রহ আগের চেয়ে কমে এসেছে।

বর্তমানে সরকারি খাদ্যগুদাম গুলোতে প্রায় ১৫ লাখ টন চাল ও গম মজুদ রয়েছে। বড় ধরনের ক্ষতি এড়াতে এসব চাল ও গম কম দামে বিক্রি করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে সরকারের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। এই ক্ষতি যাতে না বাড়ে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে খাদ্য মজুদ সংক্রান্ত এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, খাদ্য মন্ত্রী কামরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদসহ অর্থসচিব, খাদ্য সচিব ও কৃষি সচিব উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সূত্র জানায়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিবছরই খাদ্য মজুদ গড়ে তোলে। চলতি বছর দেশে খাদ্য মজুদের ধারণ ক্ষমতা যেমন বেড়েছে তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে খাদ্য মজুদও বেড়েছে। বর্তমানে দেশে খাদ্য মজুদের ধারণ ক্ষমতা ১৯ লাখ টনের মত আর মজুদ রয়েছে ১৫ লাখ টনের মত। দেশের বিভিন্ন গুদামে যে চাল ও গম রয়েছে সেগুলোর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এর মধ্যে চালের অবস্থা খারাপ। এসব চাল খুব দ্রæত সময়ের মধ্যে বিক্রির ব্যবস্থা করা না হলে ক্ষতির পরিমান অনেক বেশি হবে।

খাদ্য মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতি কেজি চালের দাম ৫ টাকা ও গমের দাম ২ টাকা করে কমালে সরকারের প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। এরপরও দ্রæত সময়ের মধ্যে বিক্রি প্রক্রিয়া শুরু করতে না পারলে ক্ষতির পরিমান আরো বাড়তে পারে।

সূত্র জানায়, মজুদকৃত চাল ও গম গুদাম থেকে বের করতে না পারলে আগামী মওসুমে ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না। দেশে এখন পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য রয়েছে বিধায় মানুষ আর খোলা বাজার থেকে চাল কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন না। আর এর ফলে সরকারি গুদামগুলোতে চাল ও গমের মজুদ স্থবির হয়ে রয়েছে। মজুদ কমাতে না পারলে একদিকে যেমন মজুদ করা খাদ্য নষ্ট হয়ে যাবে অন্যদিকে নতুন খাদ্য মজুদ করা সম্ভব হবে না।