ঐতিহ্য হারাচ্ছে ৫শ বছরের পুরোনো মসজিদ

ঐতিহ্য হারাচ্ছে ৫শ বছরের পুরোনো মসজিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন হবিগঞ্জের উচাইল শংকরপাশা শাহী মসজিদ (গায়েবি মসজিদ)। মসজিদটি সুলতানি আমলের স্থাপত্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। সদর উপজেলার রাজিউরা ইউনিয়নের উচাইল গ্রামে প্রায় ৬ একর জমির ওপর কালের সাক্ষী হয়ে আছে মসজিদটি।

জানা যায়, অত্যন্ত চমৎকার মসজিদটির কারুকাজ আর নির্মাণশৈলী। উন্নতমানের প্রলেপহীন পোড়া ইট কেটে সেঁটে দেওয়া হয়েছে ইমারতে। দেয়ালের বাইরের অংশে পোড়া ইটের ওপর বিভিন্ন নকশা এবং অলঙ্করণ সহজেই মুসল্লি ও দর্শনার্থীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মসজিদটি লাল বা রক্তিম বলে অনেকে ‘লাল মসজিদ’ বলে থাকেন। আবার টিলার ওপরে বলে ‘টিলা মসজিদ’ও বলা হয়। দু’টি মিলিয়ে ‘লালটিলা মসজিদ’ও বলা হয়। কেউ কেউ গায়েবি মসজিদও বলে থাকেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মসজিদের সুদৃশ্য ইমারত বা ভবন নির্মাণ করা হয় সুলতান আলাউদ্দিন হোসাইন শাহের আমলে। ইমারতটির দৈর্ঘ ও প্রস্থ একই মাপের (২১ ফুট ৬ ইঞ্চি)। বারান্দা ৩ ফুটের সামান্য বেশি। একে অনেক সময় চার গম্বুজ মসজিদও বলা হয়। কেননা মূল বা আসল ভবনের ওপর একটি বড় বা বিশাল গম্বুজ এবং বারান্দার ওপর দেখতে পাওয়া যায় তিনটি ছোট গম্বুজ। দরজা-জানালা আছে প্রায় ১৫টি। দরজা ও জানালা প্রায় একই আকৃতির। সব দিকের দেয়ালের পুরুত্বই বেশি। তিন দিকের পুরুত্ব প্রায় ৫ ফুট। পশ্চিম দিকের দেয়ালের পুরুত্ব এর প্রায় দ্বিগুণ বা প্রায় ১০ ফুট। মোট ৬টি কারুকার্য শোভিত স্তম্ভ আছে প্রধান কক্ষের চার কোণে ও বারান্দার দুই কোণে। উপরের ছাদ আর প্রধান প্রাচীরের কার্নিশ নির্মাণ করা হয়েছে বাঁকানোভাবে। মসজিদের দক্ষিণ পাশে রয়েছে বড় দীঘি। এটি মসজিদটির সৌন্দর্য যেন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্বীন ইসলাম উনার বিশেষ দিবসসমূহতে এখানে বেশি ভিড় হয়। তবে প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ৫শ বছরের পুরোনো মসজিদটি ক্রমেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রাচীন মসজিদটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে সরকারের প্রত্নতত্ব বিভাগ। তবে এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি কার্যকর কোনো ব্যবস্থা।

হবিগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাখাওয়াত হোসেন রুবেল বলেন, আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্তির জন্য মসজিদটির নাম পাঠিয়েছি। ইতোমধ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত হয়ে গেছে। খুব শিগগিরই মসজিদটির সংস্কার কাজ শুরু হবে।