একসঙ্গে ২ এমপিওভুক্ত কলেজে শিক্ষকতা

নিউজ ডেস্ক: একই সঙ্গে দুইটি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে সরকারি অংশের বেতন ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফের স্ত্রী আয়েশা আইরিনের বিরুদ্ধে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আয়েশা আইরিন কিশোরীগঞ্জ শিশু নিকেতন স্কুল এ্যান্ড কলেজের সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ে সহকারী শিক্ষক ও কিশোরীগঞ্জ মহিলা কলেজে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত। এই ব্যক্তি দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে সরকারি বেতন ভাতা উত্তোলনের ঘটনাটি বুধবার প্রকাশ হয়ে পড়লে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, আয়েশা আইরিন ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে কিশোরীগঞ্জ শিশু নিকেতন স্কুল এ্যান্ড কলেজে সামাজিক বিজ্ঞান শাখায় সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করলে ওই বছরেই সেপ্টেম্বরেই তিনি সরকারি অংশের বেতনের জন্য এমপিওভুক্ত হন এবং সরকারি অংশের বেতনভাতা পেয়ে আসছেন। ওই শিক্ষিকার স্কুল শাখার ইনডেক্স নম্বর ৫৫৮৬১৪। তার সোনালী ব্যাংক কিশোরীগঞ্জ শাখার হিসাব নম্বর ৩৪০৩২৬৯৩। স্কুল শিক্ষিকা প্রতিমাসে এই হিসাব নম্বর থেকে ১৭ হাজার ৩৭৬ টাকা হারে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন। ফলে এক বছরের হিসেবে তিনি স্কুল শাখা হতে সরকারি অংশের বেতনভাতা উত্তোলন করেন ২ লাখ ৩ হাজার ৮৮৪ টাকা।

এ বিষয়ে কিশোরীগঞ্জ শিশু নিকেতন স্কুল এ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক বুলবুল বলেন, আয়েশা আইরিন আমার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্কুল শাখার সামাজিক বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক। তিনি সরকারি অংশের বেতনের এমপিওভুক্ত। তিনি আমার প্রতিষ্ঠানের বাইরে একটি কলেজের প্রভাষক এটি আমার জানা নেই। তিনি এখনও আমার স্কুলের শিক্ষিকা হিসেবে কর্মরত।

অপরদিকে ওই স্কুল শিক্ষিকা উক্ত স্কুলে কর্মরত অবস্থায় কিশোরীগঞ্জ মহিলা কলেজে ইসলামের ইতিহাস বিষয়ে প্রভাষক পদে ২০০৪ সালে যোগদান করেন। ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর কিশোরীগঞ্জ মহিলা কলেজ জাতীয়করণ হয়।

সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী ২০১৯ সালের পহেলা জুলাই থেকে চলতি বছরের (২০২০) মে মাস পর্যন্ত এমপিওভুক্ত কলেজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা মোট ১১ মাসের সকল সুযোগ সুবিধাসহ সরকারি বেতনভাতা পাবেন। আয়েশা আইরিনের কলেজ শাখার ইনডেক্স নম্বর ৫৬৭৯৮৩০২ ও কিশোরীগঞ্জ সোনালী ব্যাংক শাখার হিসাব নম্বর (এ্যাকাউন্ট) ০১০২১৩০২। সে অনুযায়ী আয়েশা আইরিন কিশোরীগঞ্জ মহিলা কলেজের প্রভাষক হিসেবে সরকারি অংশের প্রতি মাসে বেতনভাতা বোনাস বাবদ ২৪ হাজার ৯০০ টাকা হিসেবে তার হিসাব নম্বরে জমা হয় ২ লাখ ৭৩ হাজার ৯০০ টাকা।

এরমধ্যে ১১ মাসের কল্যাণ তহবিলের জন্য ৯ হাজার ৬৮০ টাকা ও অবসরকালীন তহবিলের জন্য ১৪ হাজার ৫২০ টাকা কর্তনের পর তিনি মোট উত্তোলন করেন ২ লাখ ৪৯ হাজার ৭০০ টাকা।

কিশোরীগঞ্জ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মাহফুজার রহমান বলেন, আমার কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিষয়ের প্রভাষক আয়েশা আইরিন। তিনি কিশোরীগঞ্জ শিশু নিকেতন স্কুল এ্যান্ড কলেজে স্কুল শাখায় সহকারী শিক্ষক (সামাজিক বিজ্ঞান) হিসেবে কর্মরত এটি আমার জানা নেই।

তবে আয়েশা আইরিন বলেন, আমি আগে (কিশোরীগঞ্জ শিশু নিকেতন স্কুল এ্যান্ড কলেজ) যে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম সেই প্রতিষ্ঠানের উত্তোলনকৃত বেতনভাতা সরকারি কোষাগারে ফেরত দিয়েছি। কারণ আমার কলেজের সরকারি অংশের বেতন হয়েছে। আমি স্কুলের চাকরি ছেড়ে কলেজের চাকরিটি করব। এর বেশি বলতে পারবনা।

কিশোরীগঞ্জ উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আব্দুল খালেক বলেন, সরকারি কোষাগারে টাকা ফেরত বা জমা দেয়ার কোন কাগজপত্র হাতে পাইনি।

কিশোরীগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এটিএম নুরুল আমি শাহ্ এ বিষয়ে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।