উপজাতি সন্ত্রাসীদের তান্ডবে হুমকির মুখে পাহাড়ের অর্থনীতি

উপজাতি সন্ত্রাসীদের তান্ডবে হুমকির মুখে পাহাড়ের অর্থনীতি

পার্বত্য প্রতিবেদক: উপজাতি সন্ত্রাসীদের তান্ডবে পাহাড়ের অর্থনীতি হুমকির মুখে। অক্লান্ত পরিশ্রম করে কৃষকরা ফসল চাষ করেন, আর ফসল ঘরে তোলার সময় উপজাতি সন্ত্রাসীরা এসব ফসল ধ্বংস করে দিচ্ছে। বিশেষ করে বাঙালিদের গাছ- পালা ও আনারস বাগান প্রতি বছরই কেটে নষ্ট করে দিচ্ছে উপজাতি সন্ত্রাসীরা। দিন দিন উপজাতি সন্ত্রাসীদের এ তান্ডব বেড়েই চলছে। ক্ষতিগ্রস্তরা কোন প্রতিকারও পাচ্ছেন না।

এক হিসাবে দেখা গেছে, গত কয়েক বছরে উপজাতি সন্ত্রাসীরা বাঙালিদের ৫ লাখ ৩৯ হাজার গাছ কেটে ধ্বংস করে দিয়েছে। অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া না হলে পাহাড়ের অর্থনীতির পাশাপাশি জাতীয় অর্থনীতিও ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

গোয়েন্দা সূত্রের তথ্যেও বলা হয়েছে, বারবার বাঙালিদের ফসল-গাছ কেটে ফেলছে, ফসল চাষে বাধা দিলে কোন না কোন সময় বাঙালিরা পাহাড় ছাড়া হবে এমনটাই চিন্তা করে উপজাতি সন্ত্রাসীরা।

২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় পাচঁ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি গাছ কেটে ফেলেছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। যার সবগুলোই বাঙালিদের। চাঁদা না দিলে পুরো বাগান পুড়িয়ে দেয়ার হুমকী দেয়া হয়।

শুধু গাছ কেটে বা ব্যবসা বন্ধ করে ক্ষান্ত থাকছে না তারা। বাঙালি পাড়া বা সেনা-বিজিবি ক্যাম্প থেকে একটু দূরে বাঙালিদের জমি থাকলে সেখানে চাষাবাদও করতে দেয়া হয় না। চাষাবাদ করতে গেলে বাধা, ফসল পুড়িয়ে দেয়া এমনকি বাড়ি-ঘরও পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটছে।

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার চেংড়াছড়ি গুচ্ছগ্রামে দেখা যায় এমন সন্ত্রাসের শিকার ৪শ’ পরিবার। যারা তাদের নামে সরকারের দেয়া ফসলি ও বসতি জমি হারিয়ে একটি গুচ্ছগ্রামে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। থাকার জায়গার অভাবে গরু, ছাগল এবং মানুষ বসবাস করছে একই ঘরে

স্থানীয়রা জানান, ১৯৮১ সালে ৫৬টি পরিবারকে ওই এলাকার বিভিন্ন স্থানে বসবাসের জন্য খাস জমি বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু পাহাড়ি উপজাতিদের অব্যাহত বিরোধিতা ও আক্রমণের কারণে ১৯৮৮ সালে তারা সেই জমি ছেড়ে দিয়ে একত্রিত হয়ে গুচ্ছগ্রামে বসবাস করছেন তারা। সে সময় ৫৬টি পরিবারকে ২৫ শতাংশ বসতি জমি এবং পৌনে চার একর চাষযোগ্য জমি দিয়ে পুনর্বাসিত করা হয়। ৩০ বছর পর সেই ৫৬ পরিবার এখন ৪০০ পরিবারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু ২৫ শতাংশ জমির মধ্যে এক শতাংশও বাড়েনি। অন্যদিকে চাষযোগ্য যে পৌনে চার একর জমি তাদের দেয়া হয়েছিল তা পাহাড়ে হওয়ার কারণে উপজাতি সন্ত্রাসীদের বাধা ও অপহরণের ভয়ে সেগুলোতে চাষ তো দূরের কথা পা পর্যন্ত ফেলতে পারেন না বাঙালিরা। কেউ বাধা ডিঙিয়ে চাষ করার কথা চিন্তা করলেই রাতের অন্ধকারে তাকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়।

গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মুকুল হোসেন বলেন, ৩০ বছর আগে গুচ্ছগ্রামে বসবাস করার জন্য যে জমি দিয়েছিল এখন সেই জমিতে আমাদের পরিবারদের আর জায়গা হয় না। মানুষ বেড়েছে, পরিবার বেড়েছে, কিন্তু জমিতো বাড়েনি। অন্যদিকে চাষের জন্য পাহাড়ে যে জমি দিয়েছে সেই জমিতে তো আমরা যেতেই পারি না। পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে বলা হচ্ছে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করো।

বাঙালিদের অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতে বাধার পাশাপাশি পার্বত্য এলাকার উন্নয়নেও সব সময় বাধা দিয়ে আসছে কুখ্যাত উপজাতি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো।