ইরানবিরোধী সামরিক জোট গঠন করছে যুক্তরাষ্ট্র

ইরানবিরোধী সামরিক জোট গঠন করছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরান আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা কমছেই না। সম্প্রতি জাহাজে হামলার কয়েকটি ঘটনার পর এই উত্তেজনার পারদ এখন চরমে। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ সামরিক জোট গঠনের ঘোষণা দিলেন। আর এর জন্য ইরান ও ইয়েমেন উপকূলে কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ জলসীমার সুরক্ষাকে কারণ হিসেবে দেখাচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ জেনারেল জোসেফ ডানফোর্ড এই ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে এই সামরিক জোটে যেসব দেশ যোগ দিচ্ছে তাদের নাম আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে তালিকাভূক্ত করা হবে।

মার্কিন নৌবাহিনীর এই জেনারেল জানিয়েছেন, সামরিক জোট গঠনের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে সবার চলাচলের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু দেশের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছি। এখন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হলে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।’

মার্কিন ওই জেনারেল আরও জানান, জোট গঠনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র ওই সামরিক জোটের জন্য কমান্ড জাহাজ সরবরাহ করবে এবং নজরদারি প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিবে। মিত্র বাহিনীর জাহাজগুলো মার্কিন কমান্ড জাহাজের কাছাকাছি টহল দিবে। এ ছাড়া বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে পাহারা দেয়ার কাজ করবে মার্কিন নৌবহর।

হরমুজ প্রণালী এবং বাব আল-মান্দেব কৌশলগতভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। যার মাধ্যমে ভারত সাগরের সঙ্গে পারস্য সাগর এবং লোহিত সাগর যুক্ত। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী জাহাজযোগে সরবরাহ হওয়া তেলের এক পঞ্চমাংশ হরমুজ প্রণালী দিয়ে যায়। এ ছাড়া মধ্যপ্রাচ্য থেকে লোহিত সাগর হয়ে ইউরোপের দিকে যাওয়া তেলবাহী জাহাজকে অবশ্যই বাব আল-মান্দেব অতিক্রম করতে হয়।

লোহিত সাগরকে এডেন উপসাগর ও আরব সাগরের সঙ্গে সংযুক্তকারী বাব আল-মান্দেব প্রণালীটি ইয়েমেন সংলগ্ন। ইয়েমেনের ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা বিভিন্ন সময় এই জলপথে কয়েকটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের। প্রতিদিন এই প্রণালী হয়ে প্রায় ৪০ লাখ ব্যারেল তেল ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে সরবরাহ করা হয়।

হরমুজ প্রণালী দিয়ে নিজেদের তেল রফতানি করতে না পারলে পারস্য সাগরে নিজেদের উপকূল সংলগ্ন বিশ্ব বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এই প্রণালীটি অনেকদিন ধরে বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে ইরান। আর তাই যুক্তরাষ্ট্র এই প্রণালীটি নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা দেখতে চায় না।

ওই অঞ্চলে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি রয়েছে। এ ছাড়া তাদের নৌবাহিনীর নেতৃত্বে বেশ কিছু দেশের সঙ্গে যৌথ টাস্কফোর্স রয়েছে। সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ বিরোধী অভিযানসহ নানা কারণ দেখিয়ে এই অঞ্চলে দিন দিন সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।