ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতেই রপ্তানি আয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসে (আগস্ট) ২৯৬ কোটি ৭০ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। এই পরিমাণ মাসভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১১.৭২ শতাংশ কম হলেও গেল বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় সাড়ে ৪ শতাংশ (৪.৩২) বেশি। আগস্টে পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩৬ কোটি ১০ লাখ ডলার।

এদিকে, অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই ও আগস্ট মিলে মোট ৬৮৭ কোটি ৮১ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ শতাংশ বেশি এবং গেল অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের আয়ের চেয়েও ২.১৭ শতাংশ বেশি। সম্প্রতি রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর থেকে প্রাপ্ত প্রভিশনাল প্রতিবেদনে এতথ্য পাওয়া যায়।

গত দুই মাস মিলে (জুলাই ও আগস্ট) আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে দেশের ২য় বৃহত্তম রপ্তানিমুখী খাত চামড়া শিল্প। তবে, বড় ধরনের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধিতেই (১৬.৫৪ শতাংশ) আটকা পড়ে আছে এই খাত। গেল দুই মাসের হিসাবে এই খাত থেকে ১৫ কোটি ২৮ লাখ ডলারের বিপরীতে আয় এসেছে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। যদিও গেল অর্থবছরের একই সময়ে এখাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছিল ১৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার।

এদিকে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধিতে থাকা প্লাস্টিক খাত। গেল দুই মাসে এই খাতের আয় ১ কোটি ৭১ লাখ ডলার। ২ কোটি ৪ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে যা ১৬.১ শতাংশ কম। গত বছরের এই দুই মাসে প্লাস্টিক শিল্প থেকে রপ্তানি আয় এসেছিল ২ কোটি ৮ লাখ ডলার। গেল জুলাই-আগস্ট মাসের রপ্তানি আয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ (৪৯.৬৪) ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে সোনালী আঁশ পাট। পাট ও পাটপণ্য থেকে গত দুই মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। আর গতবছরের এই দুই মাসে এই খাত থেকে রপ্তানি আয় এসেছিল ১৩ কোটি ৬ লাখ ডলার।

এদিকে, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারলেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে ওষুধ রপ্তানি। প্রায় ১৯ শতাংশ (১৮.৯৪) ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে জুলাই-আগস্ট মিলে এখাতের আয় ২ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে কৃষি পণ্যের রপ্তানি আয়। জুলাই-আগস্ট মিলে এখাতের রপ্তানি আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৮৩ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ের চেয়ে যা ৩২.৬৪ শতাংশ বেশি। এই দুই মাসে হিমায়িত মাছ রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হযেছে ৬১ শতাংশ (৬০.৯৯)। তবে, ১ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে জুলাই-আগস্ট মিলে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৯৭ লাখ ৪০ হাজার ডলারের হিমায়তি মাছ। শতাংশের হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এই পরিমাণ ৪১.৩৯ ভাগ কম।

এসময়ে, মসলা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৫২.৭৪ শতাংশ। এখাতের রপ্তানি আয় হয়েছে প্রত্যাশার (লক্ষ্যমাত্রা) চেয়েও ২৫.৩০ শতাংশ বেশি। গেল দুই মাসে মসলা রপ্তানি থেকে ৬৬ লাখ ৮০ হাজার ডলারের আয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আয় এসেছে ৮৩ লাখ ৭০ লাখ ডলার।

এ সময়ে প্রায় শতভাগ (৯২.০৬) প্রবৃদ্ধি হয়েছে শুকনা খাবারের রপ্তানি আয়ে। গত বছরের জুলাই-আগস্ট মিলে এই খাতের রপ্তানি হয়েছিল ২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার আর এবছর হয়েছে ৫ কোটি ১৩ লাখ ডলার। অবশ্য এই দুই মাসে এখাত থেকে ৩ কোটি ৭৪ লাখ ডলার আয়ের ‘সাবধানী লক্ষ্যমাত্রা’ নির্ধারণ করা হয়েছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে চা রপ্তানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১৩ শতাংশ। ৬৬ হাজার ডলারের বিপরীতে আয় হয়েছে ৯৬ হাজার ডলার। নতুন খাত হিসেবে ৩৩.৩৩ শতাংশ ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে প্রসাধনী পণ্যের রপ্তানি আয়।