ইকুয়াটোরিয়াল গিনিতে ফ্রান্সের সামরিক হেলিকপ্টার আটক

ইকুয়াটোরিয়াল গিনিতে ফ্রান্সের সামরিক হেলিকপ্টার আটক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ফ্রান্সের ছয় সৈন্যবাহী একটি হেলিকপ্টার আটক করেছে মধ্য-আফ্রিকার দেশ ইকুয়াটোরিয়াল গিনি। বৃহস্পতিবার ফ্রান্স বলছে, হেলিকপ্টারটি ইকুয়াটোরিয়াল গিনির রাজধানী মালাবোতে অবতরণের পরপরই আটক করা হয়। রয়টার্স বলছে, এর ফলে মালাবো এবং প্যারিসের মধ্যে যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে সেটি পরিষ্কার হয়েছে।

ফ্রান্সের একটি আদালত ইকুয়াটোরিয়াল গিনির ভাইস প্রেসিডেন্ট টিওডোরো ওবিয়াং ম্যাঙ্গুর বাবা টিওডোরো ওবিয়াং নুয়েমা এমবাসোগোকে অর্থ পাচার এবং আত্মসাতের এক মামলায় দোষী সাব্যস্তের রায় বহাল রাখার কয়েক ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যার দিকে ফরাসী সৈন্যদের বহনকারী হেলিকপ্টারটি মালাবোর প্রধান বাটা বন্দরে অবতরণ করে। তবে আদালতের রায়ের সঙ্গে হেলিকপ্টার আটকের সম্পর্ক আছে কি না সেবিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও পক্ষই মন্তব্য করেনি।

ইকুয়াটোরিয়াল গিনির প্রেসিডেন্ট টিওডোরো ওবিয়াং নুয়েমা এমবাসোগোর ছেলে এবং উত্তরসূরী ম্যাঙ্গু এক টুইট বার্তায় বলেছেন, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ইকুয়াটোরিয়াল গিনির আকাশসীমা লঙ্ঘন করে বাটা বন্দরে অবতরণকারী একটি পরিদর্শক হেলিকপ্টার আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেছেন, এর মাধ্যমে ফ্রান্স ইকুয়াটোরিয়াল গিনি প্রজাতন্ত্রকে অস্থিতিশীল করার অভিপ্রায় দেখিয়েছে। ফ্রান্সের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল প্যাসকেল ইয়ানি বলেছেন, হেলিকপ্টারটি ছয়জন ফরাসী নিরস্ত্র সৈন্য ছিলেন। হেলিকপ্টারটি প্রতিবেশি ক্যামেরুনের দোয়ালা শহর থেকে গ্যাবনের লিবরেভিলেতে অবস্থিত সামরিক ঘাঁটিতে যাওয়ার সময় বাটায় জ্বালানি নেওয়ার জন্য যাত্রা বিরতি করেছিল। ইকুয়াটোরিয়াল গিনির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশে হেলিকপ্টারটি সেখানে অবতরণ করেনি বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইয়ানি বলেন, ইকুয়াটোরিয়াল গিনির কর্তৃপক্ষ হেলিকপ্টারটি আটকের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার মাধ্যমে এই সঙ্কট সমাধান করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ফরাসী এই সামরিক কর্মকর্তা।

৪২ বছর ধরে ইকুয়াটোরিয়াল গিনি শাসন করছেন ম্যাঙ্গুর বাবা প্রেসিডেন্ট টিওডোরো ওবিয়াং নুয়েমা এমবাসোগো। অর্থ পাচার আত্মসাতের একটি মামলায় ২০১৭ সালে ফ্রান্সের আদালতে দায়েরকৃত একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। পরে ফ্রান্সের আদালত তাকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং বড় অঙ্কের জরিমানা করেন। এর পাশাপাশি এমবাসোগোর প্যারিসের একটি প্রাসাদ এবং বিলাসবহুল গাড়িসহ বেশ কিছু সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়।

এই মামলার রায় ফ্রান্সের আদালত বহাল রাখার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ইকুয়াটোরিয়াল গিনির সরকার এবং প্রেসিডেন্টের ছেলে ম্যাঙ্গু। তবে এই মামলার মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট টিওডোরো ওবিয়াং নুয়েমা এমবাসোগোতার কূটনৈতিক দায়মুক্তির অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

সূত্র: রয়টার্স।