ইংল্যান্ডে স্ত্রী বিক্রির অসভ্য প্রথা!

নিউজ ডেস্ক: বিধর্মী তথা খ্রিস্টানরা যে পূর্ব থেকেই কত ধরণের অসভ্যতা ও নোংরামির সাথে জড়িত তার ইতিহাস ভুরিভুরি। ইংল্যান্ডের এরকম একটি কু-প্রথা ছিলো, স্ত্রী বিক্রির মতো অসভ্য কু-প্রথা।

‘অক্সফোর্ড ডিকশনারি অব ন্যাশনাল বায়োগ্রাফি’ থেকে জানা যায়, ১৭৮০ থেকে ১৮৫০ সালের মধ্যে ইংল্যান্ডে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদপত্রে স্ত্রী বিক্রির অনেক ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। তৎকালীন নথিপত্র থেকে জানা যায়, স্বামীর কাছে স্ত্রীকে বিয়ের বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দিতে তালাকের চেয়ে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়াটা সহজ ছিল।

১৭৯০ এর দশকের মধ্যে কু-প্রথাটি এতটাই ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল যে, এটি সেই সময়ের একটি আলোচিত বিষয় ছিল। স্বামীরা বিক্রির জন্য স্ত্রীর গলায়, বাহু বা কোমরে বেঁধে নিয়ে আসত। এরপর বাজারে নিয়ে প্রকাশ্যেই তাকে নিলামে উঠাতো এবং সর্বোচ্চ দরদাতার হাতে স্ত্রীকে তুলে দিতো।

স্ত্রী বিক্রির এ আজব কু-প্রথা ২০ শতকের গোড়ার দিক পর্যন্ত ইংল্যান্ডে চালু ছিল। খ্রিস্টান ইতিহাসবিদ জেমস ব্রাইসের মতে, ১৯০১ সালেও স্ত্রী বিক্রির ঘটনা নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। ইংল্যান্ডে স্ত্রী বিক্রির সর্বশেষ প্রতিবেদনের একটি হিসাবে, ১৯১৩ রহসালে লিডস (পশ্চিম ইয়র্কশায়ারের শহর) পুলিশ আদালতে একজন নারী দাবি করে, তার স্বামী তাকে এক সহকর্মীর কাছে ১ ডলারে বিক্রি করেছেন।

কেন এমন প্রথা চালু হয়েছিল এমন প্রশ্নের উত্তরে খ্রিস্টান ইতিহাসবিদ জেমস ব্রাইস বলেছে, ১৮৫৭ এর আগে ইংল্যান্ডে আদালতে হাজির হয়ে স্ত্রী তালাক দেওয়া একটি কঠিন এবং ব্যয়বহুল কাজ ছিল। বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য আইনত মামলা দায়ের এবং প্রায় তিনশ ডলার খরচ করতে হতো, যা এখন প্রায় ১৫,০০০ ডলার এর মতো। মূলত, এই বিপুল পরিমাণ অর্থের খরচ বাঁচাতে সাধারণ ইংরেজদের অনেকে স্ত্রীদের সরাসরি ডিভোর্স না দিয়ে বিক্রি করে দেওয়ার প্রথা চালু করে। ইংল্যান্ডের দরিদ্র অঞ্চলগুলোতে নারীদের অনেকটা ক্রয়-বিক্রয়যোগ্য সম্পত্তির মতোই বিবেচনা করা হতো।