আফ্রিকায় বিক্ষোভকারীদের লুটপাটে নিঃস্ব বাংলাদেশিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ডে চলমান রাজতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের লুটপাটে নিঃস্ব হচ্ছেন বাংলাদেশিরা। গত এক সপ্তাহে দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংহিতায় ৮০ ভাগ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী সবকিছু হারিয়ে পরিবার নিয়ে পথে বসেছেন।

তাদের মধ্যে একজন কল্লোল দেওয়ান (৩৮)। সহিংসতায় কোটি টাকা মূল্যের দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হারিয়েছেন তিনি। শহরের মার্কেটে দোকান হারিয়ে এখন অল্পপুঁজিতে কন্টেইনার বসিয়ে একটি গ্রামে দোকান সাজিয়ে বসেছেন।

সোয়াজিল্যান্ড থেকে কল্লোল দেওয়ান বলেন, কখনও ভাবিনি হঠাৎ করে এমনটা হতে পারে। মার্কেটে আমার কোটি টাকা মূল্যের দুটি দোকান ছিল। সবশেষ হয়ে গেল। দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছিলাম দেশটিতে। এখনও আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছি।

বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কল্লোল বলেন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে। মার্কেট ও দোকান খোলার জন্য ব্যবসায়ীদের তাগাদা দিচ্ছে তারা। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের একটা যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে সরকার আন্দোলনকারীদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছে।

সোয়াজিল্যান্ড থেকে আরেক প্রবাসী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমরা ২০টি বাংলাদেশি পরিবার একটা নিরাপদ বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। মোটামুটি নিরাপত্তার মধ্যেই আছি। আমাদের কমিউনিটি থেকে ভালো সহযোগিতা করা হচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

সোয়াজিল্যান্ডে রাজতন্ত্রবিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হলে বিক্ষোভকারীরা বিদেশি মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে। এতে কয়েকশ বাংলাদেশি দোকান হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যান।

দেশটিতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ২১ জন আন্দোলনকারী প্রাণ হারিয়েছেন। এখন মাঝে মাঝে বন্ধ থাকছে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা। তবে জারি করা কারফিউ স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।

সপ্তাহ ধরে চলা এই ধ্বংসাত্মক কর্মকা-ে অবরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে খাদ্য সংকটে পড়েছে বেশির ভাগ বাংলাদেশি পরিবার। সময়ে সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ ও ধীরগতির কারণে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে কেউ কেউ ভিপিএন ব্যবহার করে যোগাযোগ রক্ষা করছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, সোয়াজিল্যান্ডে প্রবাসীদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।