অনলাইন কুরবানীর হাট থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ অনলাইন কেনাকাটায় বাড়ছে প্রতারণা

নিজস্ব প্রতিবেদক:  বর্তমানে অনলাইন বা ডিজিটাল কেনাকাটার হার যতটুকু না বেড়েছে তার চেয়ে বেশি বেড়েছে ভুঁইফোড় বিক্রেতা। এ কারণে পণ্য হাতে পাওয়ার পর এ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই ক্রেতাদের। ইদানীং প্রায়ই ক্রেতাদের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে মার্কেটপ্লেসের ভিন্নতায় পণ্যের দামের ভিন্নতা নিয়ে। অনেক ক্রেতা অভিযোগ করছেন ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত ছবির সঙ্গে পণ্যের মিল নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যথাযথ তদারকি না থাকায় এমন প্রতারণার সুযোগ নিচ্ছে বেশিরভাগ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান।

এ কারণে বিশেষজ্ঞরা পবিত্র কুরবানীর মত একটি দ্বীনি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন কেনাকাটায় বেশ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। অনলাইনে কুরবানীর পশু কিনতে গেলে অনেকবেশি প্রতারণা ও বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির স্বীকার হতে পারেন ক্রেতা বা গ্রাহক।

আসন্ন পবিত্র কুরবানিতে অনলাইন হাট নিয়েও এমন আশঙ্কাই প্রকাশ করেছে বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, কুরবানির পশু ছবি দেখে কোনোভাবেই ক্রয় করা সম্ভব নয়। কারণ, কুরবানিসর পশু ক্রয় করার আগে সেই পশুর সুস্থতা পরীক্ষা করতে হয়। অসুস্থ ও খুঁতযুক্ত পশু দ্বারা কুরবানি করলে পবিত্র কুরবানি আদায় হয়না। কিন্তু অনলাইনে ছবি দেখে গরু কিনলে সুস্থতা যাচাই করা সম্বব নয়। ফলে এখানে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুনে বেড়ে যায়।

অনলাইন শপিংয়ের নিয়মিত কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে রকম পণ্যের ছবি দেখে তারা অর্ডার করেছেন, সে রকম পণ্য পাঠানো হচ্ছে না। ক্ষেত্রভেদে খুবই নিন্মমানের পণ্য আসছে। এ ধরনের অভিযোগ বেশি আসছে মোবাইল হ্যান্ডসেট, হাতঘড়ি, ব্লেজার, শাড়ি প্রভৃতি পণ্য নিয়ে।

গত এক বছর ধরে অনলাইনে পণ্য কেনাকাটা করছেন রাজধানীর নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী শাওন আহম্মেদ। সপ্তাহ দুয়েক আগে তিনি জনপ্রিয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে নেভি ফোর্সের একটি ঘড়ি কেনেন আড়াই হাজার টাকায়। এর একদিন পর তারই এক বন্ধু অন্য একটি অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে একই ব্র্যান্ডের একই ডিজাইনের ঘড়ি কেনেন দেড় হাজার টাকায়। অর্থাৎ একই ব্র্যান্ডের ঘড়ি ক্রয় করতে এক হাজার টাকা বেশি ব্যয় করতে হয়েছে শাওনকে।

ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অনলাইন মার্কেটের জনপ্রিয়তা বাড়লেও এখনও সরাসরি বিপণিবিতান থেকে পণ্য কেনাই ভালো মনে হচ্ছে। এতে দর যাচাই করে পণ্য কেনা যায়। পণ্য দেখে ক্রয় করা যায়।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, অনলাইন কেনাকাটায় মানুষের আগ্রহ যেমন বাড়ছে, তেমনি অভিযোগ বাড়ছে। একই ব্র্যান্ডের পণ্য একেক সাইটে একেক রকম দাম। এতে একেক গ্রাহকের একেক রকম অভিজ্ঞতা হচ্ছে। নতুন করে যেসব উদ্যোক্তা ই-কমার্স ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা নতুন করে আসছে তাদের অনেকেরই অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে দক্ষ ধারণা নেই। কিছু অদক্ষ ব্যবসায়ীদের জন্য দক্ষ ব্যবসায়ীদেরও মান ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ খাতের উদ্যোক্তাদের একটি সংগঠন থাকলেও তাদের কাজের গতি সন্তোষজনক নয়।

উল্লেখ্য, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ই-কমার্স বাজারের আকার বছরে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিদিন ৩০ হাজার ক্রেতা অনলাইনে পণ্যের অর্ডার দেন।