মুক্তচিন্তার নামে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করা হবে না: প্রধানমন্ত্রী

নিউজ নাইন২৪ডটকম, ঢাকা: ঢাকা: মুক্তচিন্তা প্রকাশের নামে কোনো ধর্মের মানুষের অনুভূতিতে আঘাত সহ্য করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে এলে তাদের উদ্দেশে তিনি একথা বলেন। বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে এক শুভেচ্ছা বক্তৃতায় বিস্তারিতভাবে নিজের মত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী ধর্ম নিয়ে যারা বাড়াবাড়ি করে তাদের কঠোর সমালোচনার পাশাপাশি যারা ধর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নোংরামি করে তাদেরও তীব্র নিন্দা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ধর্ম সম্পর্কে কেউ যদি নোংরা কথা লেখে, সেটা কেনো আমরা বরদাশত করবো?’

তিনি বলেন, ‘ফ্যাশন দাঁড়িয়ে গেছে ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু লিখলেই তারা মুক্তচিন্তার ধারক! কিন্তু আমি এখানে কোনও মুক্ত চিন্তা দেখি না। আমি দেখি নোংরামি।’

“এত নোংরা নোংরা কথা কেন লিখবে? আমি আমার ধর্ম মানি, যাকে আমি নবি মানি তার সম্পর্কে নোংরা কথা কেউ যদি লেখে সেটা কখনোই আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ঠিক তেমনি অন্য ধর্মের যারা তাদের সম্পর্কে কেউ কিছু লিখলে তাও কখনো গ্রহণযোগ্য হবে না। যারা এগুলো করে তা তাদের সম্পূর্ণ নোংরা মনের পরিচয়, বিকৃত মনের পরিচয়।” বলেন শেখ হাসিনা।

‘এটা পুরোপুরিই তাদের চরিত্রের দোষ এবং তারা বিকৃত মানসিকতার’- যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘একজন মুসলমান হিসেবে আমি প্রতিনিয়ত আমার ধর্মকে অনুসরণ করে চলি। কাজেই সে ধর্মের বিরুদ্ধে কেউ লিখলে আমি কষ্ট পাই।’

এসব লেখার জন্য কোনও অঘটন ঘটলে তার দায় সরকার নেবে না, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকেই সংযমতা নিয়ে চলতে হবে, শালীনতা বজায় রেখে চলতে হবে। অসভ্যতা কেউ করতে পারবে না। আর তা করলে তার দায়িত্ব আমরা নেবো না।

তবে এটাও বলছি, মানুষকে খুন করার মধ্য দিয়ে কোনও সমস্যার সমাধান নেই। যারা এগুলোর জন্য খুন করছে তাও ইসলাম বিরোধী। বিচারের দায়িত্ব আল্লাহ তাদের দেয়নি। যাদের কথা পছন্দ হলো না, তাদের খুন করে ফেলার মতো ঘটনাও সরকার বরদাশত করবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে। কেউ কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করবে না। ধর্মকে আঘাত করে লেখাকে অনেকে মুক্তচিন্তা বলেন। আমার কাছে এটা নোংরামি মনে হয়। আমি যে নবীকে মানি তাকে কটাক্ষ করে কোনো কথা বলা হলে সেটি মানা সম্ভব নয়।

পহেলা বৈশাখের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সবসময়ই দুঃশ্চিন্তায় থাকি, কখন কী ঘটে যায়। আশা করি কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই আমরা পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারব।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বলেছি বিকেল পাঁচটার মধ্যে প্রকাশ্য-বহিরাঙ্গনের অনুষ্ঠানগুলো শেষ করতে হবে। এতেই কারো কারো আপত্তি। কিন্ত কেন? যেহেতু আমাদের নিরাপত্তা দিতে হবে, কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই তা সম্ভব। আমাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সেটা কোন পথে কিভাবে দিতে পারবো, তার নির্দেশনা সরকারই দেবে। আর আশা করি সকলেই এই নির্দেশনা মেনে চলবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, দলের উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য আমীর হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম ও সতীশচন্দ্র রায়সহ সিনিয়র নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়েরও নেতা-কর্মীর প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।