মোসাদের সাথে বৈঠকের কথা স্বীকারোক্তি আসলাম চৌধুরীর
নিউজ নাইন, ঢাকা: মোসাদ এজেন্ট ইসরাইলি লিকুদ পার্টির নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। তবে প্রথম দিনের রিমান্ডে আসলাম সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করেনি। গ্রেপ্তারের পর সোমবার থেকে ৭ দিনের রিমান্ডে রয়েছে আসলাম চৌধুরী।
এর আগে রোববার খিলক্ষেত থানার কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে ওেসামবার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে ঢাকা মহানগর হাকিম।
মঙ্গলবার দুপুরে আসলামের রিমান্ডের ব্যাপারে মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদারের সঙ্গে সাংবাদিকতের কথা হয়। ডিসি মারুফ বলেন, আসলাম চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আসলাম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে, যা যাচাই-বাছাই চলছে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুরের পর আসলাম চৌধুরীকে মিন্টো রোডে গোয়েন্দা হেফাজতে আনা হয়। সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন গোয়েন্দারা।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রিমান্ডে আসলাম বলেছে, মার্চের শুরুর দিকে সে ভারত যায়। ওই সফর ছিল কেবল ব্যবসায়িক। ৫ থেকে ৯ মার্চ পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে। সে সময় মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে তার দেখা হয়। ভারতে যাওয়ার পর অন্য একজন ভারতীয়র মাধ্যমে সাফাদির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় একসঙ্গে ঘুরেছে, খাওয়া-দাওয়াও করেছে। আগ্রার মেয়র তাকে সংবর্ধনা দেয়। তখন মেন্দি এন সাফাদিকেও সংবর্ধনা দেয়া হয়। কিন্তু মেন্দি যে ইসরাইলের লিকুদ পার্টির নেতা, তা জানতো না। ওই সব বৈঠকে ব্যবসায়িক নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। কিন্তু রাজনীতি বা সরকার উৎখাতের কোনো আলোচনা হয়নি।
গোয়েন্দা সূত্র আরো জানায়, আসলাম চৌধুরী ষড়যন্ত্রের কথা স্বীকার করছে না। কিন্তু ওই ষড়যন্ত্র কীভাবে করা হয়েছে, তার বিস্তারিত গোয়েন্দাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। তাদের বৈঠকের ছবি দেখানো হলে তা আসলাম চৌধুরী স্বীকার করেছে। তবে এর বাইরে আসলাম কিছুই বলছে না।
চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলার বাসিন্দা আসলাম চৌধুরী ২০০৩ সালে জিয়া পরিষদের মাধ্যমে সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে আসলাম কনফিডেন্স সিমেন্টের অ্যাকাউন্ট্যান্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে। এরপর আসলাম ব্যবসা শুরু করে।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় আসলাম বিএনপি’র পক্ষে কাজ করে। এরপর ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসলাম বিএনপির মনোনয়ন পায়। ২০০৯ সালে দলের জাতীয় কাউন্সিলের পর সে বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম উত্তর জেলার বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এবং একপর্যায়ে আহ্বায়কের দায়িত্ব পায়।