ফ্রান্সসহ মানহানীকারী সকল রাষ্ট্রের প্রতি কঠিন বদদোয়ার আহবান
নিজস্ব প্রতিবেদক: “আমরা মহান বারী তায়ালা উনার নিকট তোমাদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত কঠিন বদ দুআ করছি। আমাদের অন্তরের অন্তস্থলের কামনা, পানি আগুন আর বাতাসের তান্ডবে ফ্রান্স একাকার হয়ে যাক। ফ্রান্স নামক ভূমি ইতিহাস হতে চিরতরে হারিয়ে যাক। তাদের সাথে আমাদের রাষ্ট্রীয়, অর্থনৈতিক, ব্যবসায়িকসহ সব সম্পর্ক ছিন্ন। তাদের সাথে যারা সম্পর্ক রাখবে, তারা মুসলমানদের থেকে বিচ্ছিন্ন। মুসলমানদের পক্ষ হতে, তোমাদের প্রতি চির অভিসম্পাত।” ফ্রান্সসহ সমস্ত শাতিমে রসূলের বিরুদ্ধে সারাবিশ্বের মুসলমানদের কঠিন বদদোয়া করার আহবান জানিয়েছেন, গবেষণাকেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শান মুবারকে ফ্রান্সসহ সমস্ত শাতিমে রসূলের চরম দৃষ্টতাপূর্ণ মানহানীকর যাবতীয় অপচেষ্ঠার প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে মুসলিম উম্মাহ’র দায়িত্ব ও কর্তব্য শীর্ষক সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ আহবান জানান।
তারা আরও বলেন, শুধু বাংলাদেশেই নয় ফ্রান্স, ডেনমার্ক-নেদারল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ দ্বীন ইসলাম এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যঙ্গচিত্র অংকন ও মানহানির ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। এ রাষ্ট্রগুলো বাক-স্বাধীনতার নামে বাক-আক্রমণকে বৈধ করতে চায়। লক্ষণীয়, ফ্রান্সসহ ১৬টি দেশে বাক-স্বাধীনতা হলোকাস্টের বিরুদ্ধে গেলে, তারা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু তাদের কথিত বাক-স্বাধীনতা যখন ধর্মীয় অনুভূতির বিরুদ্ধে যায়, তখন সেটাকে আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে না।
বক্তারা বলেন, আইন ও বিচারহীনতায় ক্ষুব্ধ মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিলেই সুযোগ পায় বিদেশি সাম্রাজ্যবাদীরা। ‘সন্ত্রাসী তকমা’ দিয়ে রাষ্ট্রের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপের সুযোগ নিতে চায়। কিন্তু যখন রাষ্ট্র নিজেই সু-নির্দিষ্ট ও পর্যাপ্ত আইনের ভিত্তিতে অপরাধী তথা সাংবিধানিক রাষ্ট্রদ্বীন ইসলাম ও প্রাণপ্রিয় নবীর কটুক্তিকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করবে তখন সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলো কখনই এ সুযোগ নিতে পারবে না।
বক্তারা বলেন, সম্প্রতি আমাদের দেশে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র রসূল নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুমহান শান মুবারকে মানহানীকর অপতৎপরতা আশঙ্কাজনক পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, কেবল গত ১ মাসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মানহানী করার অপরাধে বরিশালে ১জন, নোয়াখালীতে ২জন, ফেনীতে ১জন, জগন্নাথে ১জনসহ মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে সাময়িক বহিষ্কার হয়েছে। পাশাপাশি উনার মুবারক শানে মানহানীর ঘটনায় ২০১৩ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মিডিয়ার তথ্যানুযায়ী বিভিন্ন জেলায় কমপক্ষে ৩৬ জন নিহত এবং শত শত লোক আহত হয়েছে। এ থেকে বুঝা যায় দেশে বিদ্যমান আইন এ ধরণের অপকর্ম রুখতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। সুতরাং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম বিরোধী সব অতৎপরতার চিরতরে অবসান ঘটাতে হবে এজন্য নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে মানহানীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে শরঈ আইন জারী করতে হবে।
বক্তারা বলেন, মুসলিম দেশগুলোর প্রতি আহবান জানিয়ে বক্তারা বলেন, সমস্ত মুসলিম দেশ থেকে ফ্রান্সসহ সকল দুশমনে রসূলসহ তাদের সকল পণ্য বয়কট করতে হবে। ফ্রান্সের সাথে সমস্ত প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করতে হবে। ওআইসিকে ফ্রান্সের বিরুদ্ধে একযোগে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন, দৈনিক আল ইহসান এবং মাসিক আল বাইয়্যিনাত পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক মুফতিয়ে আ’যম, গবেষণাকেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফের প্রধান গবেষক আল্লামা আবুল খায়ের মুহম্মদ আযীযুল্লাহ এবং মুহম্মদীয়া জামিয়া শরীফের মুহতামিম ও বিশিষ্ট গবেষক আল্লামা মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন, গবেষক মুহম্মদ মশিউজ্জামান বেলাল প্রমুখ। শুরুতে পবিত্র কালামে পাক তিলাওয়াত করেন, মুফতি সাইয়্যিদ মুহম্মদ শুয়াইব আহমদ, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নাত শরীফ পাঠ করেন, আল্লামা সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম এবং সেমিনার শেষে পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করেন ক্বারী মুহম্মদ আব্দুল বারী প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন, মুহম্মদ জহীরুদ্দীন, মুহম্মদ মাসউদ আলম।