ইসলাম গ্রহণের ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের নারীরা যে কারণে বেশি অগ্রগামী
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে পাশ্চাত্যের যত বৈরী প্রচারণা তার বেশীর ভাগই নারী অধিকার ও নারীর মর্যাদাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, পাশ্চাত্যের উচ্চ শিক্ষিত নারীরাই সবচেয়ে অধিকহারে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে এগিয়ে আসছেন। বিংশ শতাব্দির ১ম দশকে পাশ্চাত্যে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণকারী নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩৭%।
অন্যদিকে খ্রীস্টান ধর্ম গ্রহণকারীদের সংখ্যা সে সময়ে ৪৬% বৃদ্ধি পেলেও, এর বিপরীতে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণকারীদের সংখ্যা একই সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ২৩৫%। এক জরিপে দেখা গেছে শুধু যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ১ লাখ লোক সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন যেখানে নারীর সংখ্যা পূরুষের ৪ গুণ।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণের দিকে পাশ্চাত্যের নারীরা কেন অগ্রগামী হচ্ছেন গবেষকরা তাদের গবেষণায় কিছু বিষয় তুলে ধরেছেন।
১. পাশ্চাত্যের উচ্চ শিক্ষিত নাগরিকদের মাঝে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে পড়াশুনা করার আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। তারা পবিত্র কুরআন শরীফ নিয়ে চিন্তা ভাবনা ও গবেষণাা করছেন। ফলে তাদের অনেকেই সম্মানিত দ্বীন ইসলাম যে একটি অবিকৃত সত্য দ্বীন সেটা বুঝতে পারছেন।
২. খ্রীস্টান বিশপ ও পাদ্রীরা স্বীকার করছে, বাইবেলে অনেক সমস্যা আছে (ইট ইজ টেম্পারড)।
৩. মিডিয়ার অব্যাহত সম্মানিত দ্বীন ইসলাম ও মুসলিম বিরোধী অপপ্রচারে আর এখন মানুষ আস্থা রাখছেন না। প্রকৃত সত্য জানার জন্য সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার বিষয়ে বেশী আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ফলে নারীরা পবিত্র কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ নিয়ে গবেষণা করছেন এবং সত্য দ্বীন খুজে বের করছেন।
৪. পাশ্চাত্যের নাগরিকরা এখন খ্রীস্টানদের ত্রিত্ববাদের উপর আর বিশ্বাস করছেন না। সাইয়্যিদুনা হযরত রুহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তান হিসেবে তারা বিশ্বাস করেন না।
৫. বাইবেলে বেহেস্তে নিষিদ্ধ ফল ভক্ষণের জন্য কথিত ইভ বা সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল বাশার আলাইহাস সালাম উনাকে দায়ি করা হয়েছে। অন্যদিকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উনার মাসুম বা নিস্পাপ বলা হয়েছে।
৬. বাইবেলে কন্যাসন্তানের জন্মকে একটি ক্ষতি ও অভিশাপ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ছেলে ও মেয়ে উভয় সন্তানকে মহান আল্লাহ পাক উনার দান হিসেবে দেখানো হয়েছে।
৭. বাইবেল গির্জায় নারীদের কথা বলা নিষিদ্ধ করেছে। পক্ষান্তরে, পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে, নারীরা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে জেনে নিতে পারবে।
৮. বাইবেলে ব্যভিচারের জন্য শুধু নারীর জন্য শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তুপবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নারী-পূরুষ উভয়ের জন্য শাস্তির বিধান রয়েছে।
৯. বাইবেলে সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে। অন্যদিকে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে নারীর জন্য উত্তরাধিকারসহ অনেক অধিকারের কথা বলা হয়েছে, যা নারীদের অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করে।
১০. বাইবেলে পূরুষকে বহু স্ত্রী রাখার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে শর্ত সাপেক্ষে সর্বোচ্চ চারজন স্ত্রী রাখার অনুমতি দেয়া হয়েছে।
-উম্মু মুযযাম্মিল, দৈনিক আল ইহসান